ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে কোন কোন বিষয় এ এক্সপার্ট হতে হবে

ফ্রিল্যান্সিং করে যে কাজে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন বিস্তারিত জেনে নিন

ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে কোন কোন বিষয় এ এক্সপার্ট হতে হবে আপনি যদি এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান তবে আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন। কেননা আজকে আমরা উক্ত বিষয়টি নিয়ে বিস্তারভাবে আলোচনা করবো।

ডিজিটাল-মার্কেটিং-করতে-হলে-কোন-কোন-বিষয়-এ-এক্সপার্ট-হতে-হবে

বর্তমান ডিজিটাল যুগে, ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্র্যান্ড প্রচার বা ক্যারিয়ার গড়তে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা বা এই বিষয়ে জানা অপরিহার্য। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে এক্সপার্ট হতে গেলে কোন কোন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা দরকার? আসুন, বিস্তারিত জানি।

পোস্ট সূচিপত্র: ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে কোন কোন বিষয় এ এক্সপার্ট হতে হবে

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

প্রিয় পাঠক, চলুন আমরা প্রথমে জেনে আসি ডিজিটাল মার্কেটিং কি সে সম্পর্কে। এই বিষয়টি আমাদের জানা হয়ে গেলে আমরা এরপর জানবো কেন ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা জরুরি? এবং এই বিষয়টি সম্পর্কে জানা হয়ে গেলে আমরা পরবর্তীতে আলোচনা করবো আমাদের মূল বিষয়- ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে কোন কোন বিষয় এ এক্সপার্ট হতে হবে? সম্পর্কে। চলুন আলোচনা করা যাক ডিজিটাল মার্কেটিং কি? তা নিয়ে।

ডিজিটাল মার্কেটিং হলো ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পণ্য বা সেবার প্রচার করা। এর মূল লক্ষ্য হলো টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানো এবং তাদেরকে ক্রয়ের জন্য প্রভাবিত করা। এই মার্কেটিংয়ের মধ্যে রয়েছে ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল, সার্চ ইঞ্জিন, মোবাইল অ্যাপসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার। আগের দিনের প্রচলিত মার্কেটিংয়ের তুলনায় ডিজিটাল মার্কেটিং দ্রুত, সাশ্রয়ী এবং পরিমাপযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ, একটি বিজ্ঞাপন কতজন মানুষ দেখলো বা ক্লিক করলো তা সহজেই ট্র্যাক করা যায়।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রধান উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন), কন্টেন্ট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, পেইড অ্যাডভার্টাইজিং (PPC), ডাটা অ্যানালিটিক্স, কাস্টমার রিলেশন ম্যানেজমেন্ট (CRM), কপিরাইটিং ও কনভার্সন রেট অপ্টিমাইজেশন (CRO), ভিডিও মার্কেটিং, ই-কমার্স মার্কেটিং, ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং, মোবাইল মার্কেটিং এবং পেপিসি (পে-পর-ক্লিক)। প্রতিটি বিষয় আলাদা কাজ করে কিন্তু একসাথে ব্যবহার করলে ফলাফল বেশি কার্যকর হয়। যেমন, এসইও দিয়ে ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ানো যায়, আর কন্টেন্ট মার্কেটিং দিয়ে সেই ভিজিটরদের ধরে রাখা সম্ভব। বর্তমানে ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ডিজিটাল মার্কেটিং অপরিহার্য। গ্রাহকরা এখন ইন্টারনেটে বেশি সময় কাটান, তাই তাদের সাথে যোগাযোগের সেরা মাধ্যম হলো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি গ্রাহকের ফিডব্যাক পায় এবং দ্রুত সেবার মান উন্নত করতে পারে।

ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার আগে এর ব্যাপকতা বুঝতে হবে। এটি শুধু বিজ্ঞাপন দেওয়া নয়, বরং গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী কৌশল তৈরি করা। সঠিক টুলস এবং টেকনিক জানলেই এই ক্ষেত্রে সফল হওয়া সম্ভব।

কেন ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা জরুরি?

বর্তমান যুগে প্রতিটি ব্যবসার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং জ্ঞান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, তাই গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর সেরা মাধ্যম এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। ডিজিটাল মার্কেটিং না জানলে কোনো ব্র্যান্ডের পক্ষে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন। এই দক্ষতা শিখলে নিজের ব্যবসা বা চাকরির ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ তৈরি হয়।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে কম খরচে বড় অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানো যায়। উদাহরণস্বরূপ, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট হাজার হাজার মানুষের কাছে শেয়ার হতে পারে, যা টেলিভিশন বা পত্রিকার বিজ্ঞাপনের চেয়ে সস্তা। এছাড়া, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ফলাফল রিয়েল টাইমে মনিটর করা যায়। বিজ্ঞাপনের পারফরম্যান্স দেখে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। চাকরির বাজারে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাহিদা ব্যাপক। কোম্পানিগুলো এখন দক্ষ প্রফেশনাল খুঁজছে যারা অনলাইন মার্কেটিং ক্যাম্পেইন ম্যানেজ করতে পারবে। এই স্কিল শিখলে ফ্রিল্যান্সিং বা রিমোট জবের সুযোগও পাওয়া যায়। শেষ পর্যন্ত, ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা শুধু ট্রেন্ড নয়, বরং প্রয়োজনীয়তা। ভবিষ্যতে সমস্ত মার্কেটিং কার্যক্রম ডিজিটালাইজড হবে, তাই এখনই এই দক্ষতা অর্জন করে এগিয়ে থাকা জরুরি।

ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে কোন কোন বিষয় এ এক্সপার্ট হতে হবে?

চলুন প্রিয় পাঠক, এবার আলোচনা করা যাক ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে কোন কোন বিষয় এ এক্সপার্ট হতে হবে সে সম্পর্কে।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে সফল হতে হলে কয়েকটি মূল বিষয়ে দক্ষতা প্রয়োজন। প্রথমত, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (এসইও) সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকতে হবে। কীওয়ার্ড রিসার্চ, অন-পেজ এবং অফ-পেজ এসইও, টেকনিক্যাল এসইও-এগুলো শিখলে ওয়েবসাইটের র্যাংকিং উন্নত করা যায়। দ্বিতীয়ত, কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ে পারদর্শী হতে হবে। গ্রাহকদের আকর্ষণ করার জন্য মানসম্মত ব্লগ, ভিডিও, ইনফোগ্রাফিক তৈরি করা শেখা প্রয়োজন। কন্টেন্টের মাধ্যমে ব্র্যান্ডের গল্প বলতে হবে এবং গ্রাহকের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিঙ্কডইনের মতো প্ল্যাটফর্মে ক্যাম্পেইন চালানো, অডিয়েন্স এনালাইসিস এবং এনগেজমেন্ট বাড়ানোর কৌশল জানা আবশ্যক। এছাড়া, ইমেইল মার্কেটিং, পেপিসি বিজ্ঞাপন এবং ডেটা অ্যানালিটিক্সের দক্ষতাও প্রয়োজন। সবশেষে, ক্রমাগত শেখার মানসিকতা থাকতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ট্রেন্ড দ্রুত পরিবর্তন হয়, তাই নতুন টুলস এবং টেকনিক শেখা বন্ধ করা যাবে না। প্র্যাকটিস এবং এক্সপেরিমেন্টের মাধ্যমে নিজের দক্ষতা পরিমার্জন করতে হবে।

আমরা এখন উপরে উল্লেখিত SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন), কন্টেন্ট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, পেইড অ্যাডভার্টাইজিং (PPC), ডাটা অ্যানালিটিক্স, কাস্টমার রিলেশন ম্যানেজমেন্ট (CRM), কপিরাইটিং ও কনভার্সন রেট অপ্টিমাইজেশন (CRO), ভিডিও মার্কেটিং, ই-কমার্স মার্কেটিং, ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং, মোবাইল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো। তবে চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন)

ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে কোন কোন বিষয় এ এক্সপার্ট হতে হবে এই প্রশ্নের সর্বপ্রথম উত্তর হচ্ছে- উক্ত পয়েন্টটি এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন)। চলুন এটি নিয়ে আলোচনা করা যাক।

SEO-সার্চ-ইঞ্জিন-অপ্টিমাইজেশন

এসইও হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পৃষ্ঠায় নিয়ে আসা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো অর্গানিক ট্রাফিক বাড়ানো। এসইও সফল হলে বিজ্ঞাপনের খরচ ছাড়াই গ্রাহকরা ওয়েবসাইটে ভিজিট করে। এসইও তিন ধরনের: অন-পেজ, অফ-পেজ এবং টেকনিক্যাল। অন-পেজ এসইওতে ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট, হেডিং, মেটা ট্যাগ অপ্টিমাইজ করা হয়। অফ-পেজ এসইও মূলত ব্যাকলিংক বিল্ডিং এর সাথে সম্পর্কিত। অন্য ওয়েবসাইট থেকে লিংক পাওয়া গেলে সার্চ ইঞ্জিন সাইটটিকে বিশ্বস্ত মনে করে।


টেকনিক্যাল এসইওতে ওয়েবসাইটের স্পিড, মোবাইল ফ্রেন্ডলিনেস, সিকিউরিটি (HTTPS) ইত্যাদি উন্নত করা হয়। সার্চ ইঞ্জিন দ্রুত লোড হওয়া সাইটগুলোকে প্রাধান্য দেয়। এসইও কাজে কীওয়ার্ড রিসার্চ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গ্রাহকরা কোন শব্দগুলো সার্চ করে তা জানলে কন্টেন্টে সেগুলো যোগ করতে হবে। এসইও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া, কিন্তু এর ফলাফল দীর্ঘস্থায়ী। নিয়মিত কন্টেন্ট আপডেট এবং ব্যাকলিংক তৈরি করলে ধীরে ধীরে র্যাংকিং উন্নত হয়। প্রতিযোগী বিশ্লেষণ করেও এসইও স্ট্র্যাটেজি ঠিক করা যায়।

কন্টেন্ট মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ভেতরে কন্টেন্ট মার্কেটিং হলো একটি সেক্টর। ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের বিষয় এ এক্সপার্ট হতে হবে। কেন হতে হবে সেটি সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত বলা হলো।

কন্টেন্ট মার্কেটিং হলো গ্রাহকদের সাহায্য বা বিনোদন দেওয়ার মাধ্যমে ব্র্যান্ডের প্রতি আগ্রহ তৈরি করা। এর মাধ্যমে গ্রাহকরা সরাসরি বিজ্ঞাপন না পেয়েও ব্র্যান্ডের সাথে পরিচিত হয়। ব্লগ পোস্ট, ভিডিও, পডকাস্ট, ই-বুক-এগুলো কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের উদাহরণ। কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের সফলতার জন্য টার্গেট অডিয়েন্স বুঝতে হবে। তাদের সমস্যা, চাহিদা এবং আগ্রহ সম্পর্কে জেনে সেই অনুযায়ী কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে। যেমন, ত্বকের যত্নের পণ্য বিক্রি করলে স্কিন কেয়ার টিপস সম্পর্কে ব্লগ লেখা যেতে পারে।

কন্টেন্ট অবশ্যই মানসম্মত এবং ইউনিক হতে হবে। কপি করা কন্টেন্ট সার্চ ইঞ্জিনে শাস্তি পেতে পারে। নিয়মিত কন্টেন্ট পাবলিশ করলে অডিয়েন্সের সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইমেইলের মাধ্যমে কন্টেন্ট শেয়ার করে রিচ বাড়ানো যায়। কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের ফলাফল মাপার জন্য অ্যানালিটিক্স টুলস ব্যবহার করা হয়। কন্টেন্ট কতজন দেখলো, শেয়ার করলো বা লিড জেনারেট করলো-এগুলো ট্র্যাক করে ভবিষ্যতের প্ল্যান তৈরি করা যায়। সঠিক কন্টেন্ট স্ট্র্যাটেজি ব্র্যান্ডকে দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য এনে দেয়।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ভেতরে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটিং সেক্টর। চলুন এটি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হলো ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, লিঙ্কডইন বা টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মে ব্র্যান্ডের উপস্থিতি তৈরি করে গ্রাহকদের সাথে সরাসরি সংযোগ স্থাপন। এই মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে পণ্য বা সেবার প্রচার করা হয়, গ্রাহকদের মতামত সংগ্রহ করা হয় এবং ব্র্যান্ডের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানো হয়। সোশ্যাল মিডিয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর বিশাল ব্যবহারকারী। উদাহরণস্বরূপ, শুধুমাত্র ফেসবুকেই মাসিক ৩ বিলিয়নের বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছেন। এখানে বিজ্ঞাপন দিলে নির্দিষ্ট বয়স, এলাকা বা আগ্রহের ভিত্তিতে মানুষকে টার্গেট করা যায়।

সফল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের জন্য কন্টেন্ট প্ল্যানিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন কোন ধরনের পোস্ট (ভিডিও, ছবি, টেক্সট) শেয়ার করা হবে, সপ্তাহের কোন দিনে পোস্ট করা হবে, তা আগে থেকে ঠিক করতে হয়। অডিয়েন্সের রিয়েল-টাইম রিয়্যাকশন মনিটর করে কৌশল পরিবর্তন করা যায়। যেমন, একটি পোস্টে বেশি লাইক বা শেয়ার পেলে সেটিকে প্রমোট করে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়। এছাড়া, ইন্টারঅ্যাক্টিভ কন্টেন্ট যেমন পোল, কুইজ বা লাইভ স্ট্রিমিং ব্যবহার করে দর্শকদের অংশগ্রহণ বাড়ানো যায়।

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং সোশ্যাল মিডিয়ার একটি বড় অংশ। জনপ্রিয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে পণ্যের প্রচার করলে গ্রাহকের বিশ্বাস বাড়ে। তবে, ইনফ্লুয়েন্সার বাছাইয়ের সময় তাদের ফ্যান বেসের ডেমোগ্রাফিক্স এবং এনগেজমেন্ট রেট খেয়াল করতে হবে। সবশেষে, ধৈর্য্য এবং ধারাবাহিকতা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের সাফল্যের চাবিকাঠি। নিয়মিত পোস্ট, ফিডব্যাক বিশ্লেষণ এবং ট্রেন্ড আপডেটের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী ফলাফল পাওয়া সম্ভব।

ইমেইল মার্কেটিং

ইমেইল মার্কেটিং হলো গ্রাহকের ইনবক্সে পৌঁছে তাদেরকে প্রাসঙ্গিক অফার বা আপডেট পাঠানোর প্রক্রিয়া। এই পদ্ধতিতে ব্যক্তিগতভাবে গ্রাহককে টার্গেট করা যায় বলে রূপান্তর হার (কনভার্সন রেট) বেশি হয়। ইমেইল মার্কেটিংয়ের প্রথম ধাপ হলো ইমেইল লিস্ট তৈরি করা। ওয়েবসাইটে সাইন-আপ ফর্ম, ল্যান্ডিং পেজে বিশেষ অফার (যেমন ফ্রি ই-বুক) বা সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ভিজিটরদের কাছ থেকে ইমেইল সংগ্রহ করা যায়।

ইমেইল ক্যাম্পেইনের সফলতা নির্ভর করে দুটি বিষয়ের উপর: শিরোনাম এবং কন্টেন্ট। শিরোনাম এমন হওয়া চাই যাতে গ্রাহক ইমেইল খুলতে আগ্রহী হন। কন্টেন্টে স্পষ্ট কল-টু-অ্যাকশন (ক্রয় করার আহ্বান) যোগ করতে হবে, যেমন "এখনই অর্ডার করুন" বা "বিস্তারিত জানুন"। এছাড়া, ইমেইল ডিজাইন মোবাইল ফ্রেন্ডলি হতে হবে, কারণ ৮০% ব্যবহারকারী ফোনে ইমেইল পড়েন।

ইমেইল মার্কেটিংয়ের ফলাফল ট্র্যাক করার জন্য ওপেন রেট (কতজন ইমেইল খুললো), ক্লিক-থ্রু রেট (কতজন লিংকে ক্লিক করলো) এবং কনভার্সন রেট মনিটর করতে হয়। এ/বি টেস্টিংয়ের মাধ্যমে দুটি ভিন্ন শিরোনাম বা ডিজাইন টেস্ট করে দেখতে পারেন কোনটি বেশি কার্যকর। নিয়মিত ইমেইল লিস্ট পরিষ্কার করে নিষ্ক্রিয় সাবস্ক্রাইবারদের সরিয়ে ফেললে ক্যাম্পেইনের কার্যকারিতা বাড়ে।

পেইড অ্যাডভার্টাইজিং (PPC)

পেইড অ্যাডভার্টাইজিং বা পিপিসি হলো গুগল, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মে টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন দেখানোর পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে দ্রুত ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনা যায় এবং বিক্রি বাড়ানো যায়। পিপিসির বড় সুবিধা হলো বাজেট কন্ট্রোল করা যায়। আপনি প্রতিদিন কত টাকা খরচ করবেন, কাকে টার্গেট করবেন, তা নিজেই ঠিক করতে পারেন। পিপিসি ক্যাম্পেইন সেটআপ করার আগে কীওয়ার্ড রিসার্চ করা জরুরি। গুগল অ্যাডসের কীওয়ার্ড প্ল্যানার টুল ব্যবহার করে কম প্রতিযোগিতামূলক এবং উচ্চ ভলিউমের কীওয়ার্ড বাছাই করুন। এরপর, বিজ্ঞাপনের শিরোনাম ও বর্ণনায় সেই কীওয়ার্ড যোগ করুন। এতে অ্যাডের কোয়ালিটি স্কোর বাড়ে এবং প্রতি ক্লিকের খরচ কমে। পিপিসির সফলতা নির্ভর করে ল্যান্ডিং পেজের উপর। ব্যবহারকারী ক্লিক করে আপনার সাইটে এলে তাকে প্রাসঙ্গিক অফার দেখাতে হবে। ল্যান্ডিং পেজ দ্রুত লোড হওয়া, মোবাইল ফ্রেন্ডলি এবং ব্যবহারে সহজ হতে হবে। স্পষ্ট কল-টু-অ্যাকশন বাটন (যেমন "এখন কিনুন") যোগ করলে কনভার্সন রেট বাড়ে।

ডাটা অ্যানালিটিক্স

ডাটা অ্যানালিটিক্স হলো মার্কেটিং কার্যক্রমের ডেটা সংগ্রহ করে তা থেকে অর্থপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া। গুগল অ্যানালিটিক্স, ফেসবুক ইনসাইটস বা অন্যান্য টুলের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের ট্রাফিক, ব্যবহারকারীর আচরণ এবং কনভার্সন রেট বিশ্লেষণ করা যায়। ডাটা অ্যানালিটিক্সের মাধ্যমে বুঝতে পারবেন কোন মার্কেটিং চ্যানেল বেশি কার্যকর, কোন কন্টেন্ট দর্শকদের আকর্ষণ করছে।

প্রথমে ওয়েবসাইটে ট্র্যাকিং কোড যোগ করে ডেটা সংগ্রহ শুরু করুন। গুগল অ্যানালিটিক্সে ভিজিটরদের বয়স, লিঙ্গ, অবস্থান, আগ্রহ ইত্যাদি ডেটা দেখা যায়। এই তথ্য ব্যবহার করে টার্গেট অডিয়েন্সের প্রোফাইল তৈরি করুন। এরপর, কন্টেন্টের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করুন। কোন ব্লগ পোস্ট বেশি পড়া হচ্ছে, কোন পেজে ব্যবহারকারীরা দ্রুত বেরিয়ে যাচ্ছে-এসব তথ্য কন্টেন্ট উন্নত করতে সাহায্য করবে। ডাটা অ্যানালিটিক্সের চ্যালেঞ্জ হলো বিশাল তথ্য সামলানো। গুরুত্বপূর্ণ মেট্রিক্স যেমন ট্রাফিক সোর্স, বাউন্স রেট, গড় সেশন সময়ের উপর ফোকাস করুন। ড্যাশবোর্ড তৈরি করে সব ডেটা এক জায়গায় দেখলে বিশ্লেষণ সহজ হয়। নিয়মিত রিপোর্ট তৈরি করে টিমের সাথে শেয়ার করলে সমন্বিত প্রচেষ্টা নিশ্চিত হয়।

কাস্টমার রিলেশন ম্যানেজমেন্ট (CRM)

কাস্টমার রিলেশন ম্যানেজমেন্ট (CRM) হলো গ্রাহকের সাথে সম্পর্ক উন্নত করার জন্য ডেটা সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার প্রক্রিয়া। CRM সফটওয়্যারের মাধ্যমে গ্রাহকের যোগাযোগের ইতিহাস, ক্রয় রেকর্ড, পছন্দ-অপছন্দ ট্র্যাক করা যায়। এই তথ্য ব্যবহার করে গ্রাহককে ব্যক্তিগত সেবা দেওয়া সম্ভব।

সিআরএম এর প্রধান সুবিধা হলো গ্রাহক ধরে রাখা। উদাহরণস্বরূপ, কোনো গ্রাহকের জন্মদিনে বিশেষ ডিসকাউন্ট পাঠালে তিনি ব্র্যান্ডের প্রতি অনুগত হন। এছাড়া, সিআরএম ডেটা ব্যবহার করে মার্কেটিং ক্যাম্পেইন পার্সোনালাইজ করা যায়। গ্রাহকের পূর্ববর্তী ক্রয় ইতিহাস দেখে সংশ্লিষ্ট অফার পাঠানো যায়। সিআরএম টুল নির্বাচনের সময় ব্যবহারের সহজতা, ইন্টিগ্রেশন ক্ষমতা এবং মূল্য বিবেচনা করুন। হাবস্পট, জোহো সিআরএম, বা সেলসফোর্সের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো জনপ্রিয়। এগুলোর মাধ্যমে অটোমেটেড ইমেইল, টাস্ক রিমাইন্ডার, সেলস রিপোর্ট তৈরি করা যায়। সিআরএম সফলভাবে ব্যবহার করতে টিমের সকল সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিন। ডেটা নিয়মিত আপডেট রাখুন এবং ব্যাকআপ নিন। গ্রাহকের ডেটা নিরাপত্তার সাথে সংরক্ষণ করুন যাতে কোনো তথ্য লিক না হয়।

কপিরাইটিং ও কনভার্সন রেট অপ্টিমাইজেশন (CRO)

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ভেতরে কপিরাইটিং ও কনভার্সন রেট অপ্টিমাইজেশন (CRO) বিষয়ে ধারণা নিয়ে কাজ করতে পারেন। এটির মূল কাজ কি চলুন জেনে আসা যাক।

কপিরাইটিং হলো লেখার মাধ্যমে গ্রাহককে ক্রয় বা কোনো কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করা। ভালো কপিরাইটিংয়ে গ্রাহকের সমস্যার সমাধান এবং সুবিধা তুলে ধরা হয়। শিরোনাম, উপশিরোনাম, এবং মূল বক্তব্য এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে দর্শক শেষ পর্যন্ত পড়তে আগ্রহী হয়। কনভার্সন রেট অপ্টিমাইজেশন (সিআরও) হলো ওয়েবসাইটের ডিজাইন বা কন্টেন্ট পরিবর্তন করে বেশি বিক্রি বা লিড জেনারেট করা। এ/বি টেস্টিংয়ের মাধ্যমে দুটি ভিন্ন ল্যান্ডিং পেজের পারফরম্যান্স তুলনা করা হয়। ছোট পরিবর্তন যেমন বাটনের রং, ফর্মের দৈর্ঘ্য বা ছবির অবস্থান বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

কপিরাইটিং এবং সিআরও একসাথে কাজ করে। আকর্ষণীয় কপি গ্রাহকের আগ্রহ বাড়ায়, আর অপ্টিমাইজড ল্যান্ডিং পেজ তাকে ক্রয়ে উৎসাহিত করে। উদাহরণস্বরূপ, "বিক্রি হওয়ার আগেই কিনে ফেলুন!"-এর মতো জরুরিত্ব তৈরি করে কপি লিখলে গ্রাহক দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন। এই ক্ষেত্রে গ্রাহকের মানসিকতা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। ভয় (স্টক শেষ হওয়ার), লোভ (বড় ডিসকাউন্ট), বা বিশ্বাস (গ্রাহক রিভিউ) ব্যবহার করে কপি লিখুন। নিয়মিত টেস্ট করে সেরা ভার্সন বেছে নিন।

ভিডিও মার্কেটিং

ভিডিও মার্কেটিং বর্তমানে সবচেয়ে শক্তিশালী ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল। ইউটিউব, ফেসবুক, টিকটক, বা ইনস্টাগ্রাম রিলসের মাধ্যমে ব্র্যান্ডের গল্প সৃজনশীলভাবে উপস্থাপন করা যায়। ভিডিওর মাধ্যমে জটিল তথ্য সহজে বোঝানো যায় এবং দর্শকের সাথে আবেগী সংযোগ তৈরি হয়। ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করার আগে স্ক্রিপ্ট এবং স্টোরিবোর্ড ঠিক করুন। প্রথম ৫ সেকেন্ডে দর্শকের মনোযোগ ধরে রাখার জন্য আকর্ষণীয় ইন্ট্রো যোগ করুন। টিউটোরিয়াল, প্রোডাক্ট ডেমো, বা কাস্টমার সাক্ষাত্কারের মতো বিভিন্ন ফরম্যাটে ভিডিও তৈরি করুন।

ভিডিও-মার্কেটিং-সম্পর্কে-জেনে-নিন

ভিডিও অপ্টিমাইজেশনের জন্য টাইটেলে কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন, ডেস্ক্রিপশনে প্রাসঙ্গিক লিংক দিন, এবং ট্যাগ যোগ করুন। এর জন্য এসইও প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। ইউটিউবের জন্য ভিডিও ট্রান্সক্রিপ্ট আপলোড করলে সার্চ ইঞ্জিনে ভিজিবিলিটি বাড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও শেয়ার করে রিচ বাড়ানো যায়। ভিডিও মার্কেটিংয়ে ধারাবাহিকতা গুরুত্বপূর্ণ। সাপ্তাহিক বা মাসিক ভিডিও আপলোডের রুটিন তৈরি করুন। এনালিটিক্স দেখে বুঝুন কোন ভিডিও বেশি পছন্দ হচ্ছে এবং সেই অনুযায়ী কন্টেন্ট প্ল্যান করুন। লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে রিয়েল-টাইমে গ্রাহকের প্রশ্নের উত্তর দিন।

ই-কমার্স মার্কেটিং

ই-কমার্স মার্কেটিং হলো অনলাইন স্টোরের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির কৌশল। এই ক্ষেত্রে প্রোডাক্ট লিস্টিং, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন, এবং গ্রাহক অভিজ্ঞতা উন্নত করতে হয়। শপিফাই, উইক্স, বা ওয়ার্ডপ্রেসের মতো প্ল্যাটফর্মে ই-কমার্স সাইট তৈরি করা যায়। প্রোডাক্ট লিস্টিংয়ে আকর্ষণীয় টাইটেল, উচ্চ-রেজোলিউশনের ছবি এবং বিস্তারিত বর্ণনা দিন। সার্চ ইঞ্জিনে দৃশ্যমান হতে কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন। গ্রাহক রিভিউ সংগ্রহ করলে নতুন ক্রেতাদের আস্থা বাড়ে।

ই-কমার্স সাইটের জন্য গুগল শপিং অ্যাডস বা ফেসবুক ডাইনামিক অ্যাডস কার্যকর। পরিত্যক্ত কার্ট রিমাইন্ডার ইমেইল পাঠালে ৩০% পর্যন্ত বিক্রি বাড়ে। লয়্যালটি প্রোগ্রাম চালু করে রিটার্নিং কাস্টমারদের পুরস্কৃত করুন। গ্রাহকের সুবিধার জন্য একাধিক পেমেন্ট অপশন (বিকাশ, নগদ, কার্ড) এবং দ্রুত ডেলিভারি সার্ভিস যোগ করুন। মোবাইল অ্যাপ তৈরি করলে অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সহজ হয়। ২৪/৭ কাস্টমার সাপোর্টের মাধ্যমে গ্রাহকের সমস্যা দ্রুত সমাধান করুন।

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং

চলুন প্রিয় পাঠক এবার জেনে নেওয়া যাক ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংয়ের কাজ সম্পর্কে।

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংয়ে সামাজিক মাধ্যমের জনপ্রিয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে ব্র্যান্ডের প্রচার করা হয়। তাদের অনুসারীদের বিশ্বাস কাজে লাগিয়ে পণ্যের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো হয়। মাইক্রো-ইনফ্লুয়েন্সার (১০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ফলোয়ার)দের সাথে কাজ করলে খরচ কম হয় এবং টার্গেট অডিয়েন্সে ভালো রেসপন্স পাওয়া যায়। সঠিক ইনফ্লুয়েন্সার বাছাই করার সময় তাদের কন্টেন্ট স্টাইল, এনগেজমেন্ট রেট এবং অডিয়েন্স ডেমোগ্রাফিক্স মিলিয়ে দেখুন। 

দীর্ঘমেয়াদী পার্টনারশিপ করলে ইনফ্লুয়েন্সার আপনার ব্র্যান্ডের প্রতি আন্তরিক থাকেন। স্পন্সরড পোস্ট, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, বা প্রোডাক্ট গিফটের বিনিময়ে ইনফ্লুয়েন্সারদের সাথে কাজ করা যায়। ক্যাম্পেইনের পারফরম্যান্স ট্র্যাক করার জন্য ইউটিএম প্যারামিটার বা ইউনিক প্রোমো কোড ব্যবহার করুন। এনগেজমেন্ট এবং বিক্রির ডেটা বিশ্লেষণ করে রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট (আরওআই) বের করুন।

মোবাইল মার্কেটিং

মোবাইল মার্কেটিং হলো স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের টার্গেট করে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন ও সংযোগ স্থাপনের কৌশল। বিশ্বের ৭০% ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে প্রবেশ করেন। তাই, ওয়েবসাইট এবং বিজ্ঞাপন মোবাইল ফ্রেন্ডলি হওয়া বাধ্যতামূলক। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পুশ নোটিফিকেশন পাঠিয়ে গ্রাহককে নতুন অফার বা আপডেট জানানো যায়। লোকেশন-বেসড মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে কাছাকাছি দোকান বা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন দেখানো যায়। এসএমএস মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি গ্রাহকের ফোনে বার্তা পাঠানো যায়।

মোবাইল সাইটের লোডিং স্পিড ৩ সেকেন্ডের নিচে রাখুন। ধীর গতির সাইট ৫৩% ভিজিটর হারায়। অ্যাক্সিলারেটেড মোবাইল পেজ (এএমপি) টেকনোলজি ব্যবহার করে স্পিড বাড়ান। মোবাইল পেমেন্ট সিস্টেম যেমন বিকাশ বা নগদ যোগ করুন। মোবাইল অ্যাডস ডিজাইনের সময়। সহজ এবং আকর্ষণীয় ভিজুয়াল ব্যবহার করুন। উল্লম্ব (ভার্টিক্যাল) ভিডিও অ্যাডস মোবাইল স্ক্রিনে ভালো দেখায়। গুগল এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় মোবাইল-ফার্স্ট অ্যাড ক্যাম্পেইন চালান।

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করার উপায়

প্রিয় পাঠক আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে নিলাম ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে কোন কোন বিষয় এ এক্সপার্ট হতে হবে সে সম্পর্কে। আপনি যদি উপরের প্রতিটি পয়েন্ট মনোযোগের সাথে পড়েন তবে আমরা আশা করছি যে, আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ভেতরে কোন সেক্টরে কাজ করতে পারবেন তা বাছাই করতে কোনো অসুবিধা হবেনা। চলুন তবে এবার আলোচনা করা যাক ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করার উপায় সম্পর্কে।

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করতে হলে প্রথমে বেসিক বিষয়গুলো শিখুন। গুগল ডিজিটাল গ্যারেজ, হাবস্পট একাডেমি বা কোর্সেরার ফ্রি কোর্স করুন। এসইও, সোশ্যাল মিডিয়া, এবং কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের উপর ফোকাস করুন। প্র্যাকটিসের জন্য ব্লগ বা সোশ্যাল মিডিয়া পেজ তৈরি করুন। বাস্তব প্রজেক্টে কাজ করলে দক্ষতা বাড়ে। ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম যেমন আপওয়ার্ক বা ফাইভারে ছোট প্রজেক্ট নিন। ক্লায়েন্টের কাজ করে রিভিউ সংগ্রহ করুন। সার্টিফিকেশন নিলে চাকরির বাজারে এগিয়ে থাকবেন। গুগল অ্যানালিটিক্স, মেটা ব্লুপ্রিন্ট, বা হুটসুইটের সার্টিফিকেশন মূল্যবান। ইন্টার্নশিপ বা জুনিয়র লেভেলের চাকরিতে আবেদন করুন। নেটওয়ার্কিং গুরুত্বপূর্ণ। লিঙ্কডইনে ডিজিটাল মার্কেটিং প্রফেশনালদের সাথে যুক্ত হন। ওয়েবিনার বা ইন্ডাস্ট্রি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে কন্টাক্ট তৈরি করুন। একটি অনলাইন পোর্টফোলিও তৈরি করে আপনার সেরা কাজগুলো প্রদর্শন করুন।

শেষ মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আমরা আজকের আলোচনার একদম শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি আর শেষ পর্যায়ে আমরা এসে বলতে পারি যে, অনলাইনে আপনি যে কোনো কাজ করেন না কেন আপনাকে ধৈর্যের সাথে কাজ করতে হবে এবং একই সাথে চেষ্টা, শ্রম চালিয়ে যেতে হবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং একটি গতিশীল এবং প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্র। নতুন ট্রেন্ড, টুলস এবং অ্যালগরিদমের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সাফল্যের জন্য ধৈর্য্য, প্র্যাকটিস এবং ক্রমাগত শেখার মানসিকতা প্রয়োজন। প্রতিটি ক্যাম্পেইনের ডেটা বিশ্লেষণ করে ভুল থেকে শিখুন এবং কৌশল আপডেট করুন। গ্রাহকের চাহিদা এবং আচরণ বোঝার চেষ্টা করুন। সৃজনশীলতা এবং ডেটা-চালিত সিদ্ধান্তের সমন্বয়ে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য অর্জন সম্ভব। শুরুতে ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা বাড়ান। মনে রাখবেন, ডিজিটাল মার্কেটিং কোনো শর্টকাট নয়-এটি একটি যাত্রা, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপ আপনাকে লক্ষ্যের কাছে নিয়ে যায়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

BLOGGER BD-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url