ফ্রিজের নরমালে বরফ জমার কারণ কি - ফ্রিজে বরফ জমার কারণ
বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত হওয়া উচিত তা
সম্পর্কে কি আপনি জানতে চান? তবে চলুন বিস্তারিতভাবে এই বিষয়টির উপর আলোচনা করা
যাক এবং জেনে আসা যাক।
সঠিক তাপমাত্রায় রেফ্রিজারেটরের খাবার সতেজ ও নিরাপদ থাকে। যদি রেফ্রিজারেটরের
তাপমাত্রা অনিয়ন্ত্রিতভাবে থাকে তবে রেফ্রিজারেটর এবং তার ভেতরে থাকা খাবারের
সমস্যা হতে পারে।
পোস্ট সূচিপত্র: বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা
কত?
বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত?
আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন, আপনার রেফ্রিজারেটর কি সঠিক তাপমাত্রায় চলছে? অনেক
সময়ই আমরা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি এড়িয়ে যাই, ফলে রেফ্রিজারেটরে থাকা খাবার
নষ্ট হয় কিংবা ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। চলুন আলোচনা করে আসি, বাসা বাড়িতে
ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত হওয়া উচিত এবং কেন তা
গুরুত্বপূর্ণ।
রেফ্রিজারেটর আজকাল প্রায় প্রতিটি বাসা বাড়ির অপরিহার্য একটি যন্ত্র। খাবার
সংরক্ষণ, পানীয় ঠান্ডা করা কিংবা রান্নার উপকরণ দীর্ঘদিন ভালো রাখার জন্য এর
ব্যবহার অপরিসীম। তবে অনেকেই জানেন না, এই যন্ত্রটি সঠিকভাবে ব্যবহারের জন্য এর
তাপমাত্রা কত রাখা উচিত। সাধারণভাবে, রেফ্রিজারেটরের মূল ফ্রিজ অংশের আদর্শ
তাপমাত্রা ৩ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হওয়া প্রয়োজন। এই তাপমাত্রায়
বেশিরভাগ খাবার ভালো থাকে এবং ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কম হয়। আবার ফ্রিজারের জন্য
সঠিক তাপমাত্রা -১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি হওয়া উচিত। এই মাত্রা ঠিক থাকলে
মাছ-মাংসসহ হিমায়িত খাবার দীর্ঘদিন ভালো থাকে।
অনেকে ভুল ধারণা করেন, যত বেশি ঠান্ডা, তত ভালো। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। অতিরিক্ত
ঠান্ডায় কিছু খাবার যেমন দুধ, ডিম, শাকসবজি ইত্যাদি জমে গিয়ে তাদের গুণগত মান
হারাতে পারে। আবার তাপমাত্রা যদি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে খাবারে জীবাণু
জন্মাতে পারে এবং খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই সঠিক তাপমাত্রা বজায়
রাখা শুধু খাবার ভালো রাখার জন্য নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও জরুরি।
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা ঠিক রাখার আরেকটি বড় কারণ হলো বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা।
ফ্রিজ যদি অতিরিক্ত ঠান্ডা করা হয়, তবে এটি বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে। আবার খুব কম
ঠান্ডা করলে খাবার নষ্ট হয়ে যাবে, ফলে একদিকে খাবারের অপচয় হবে অন্যদিকে
বিদ্যুৎ খরচও বাড়বে। তাই একটি নির্দিষ্ট মানের মধ্যে তাপমাত্রা রাখলে ফ্রিজও
সঠিকভাবে কাজ করবে এবং বিদ্যুৎ বিলও কম আসবে।
সবশেষে বলা যায়, একটি ভালো মানের ডিজিটাল থার্মোমিটার ব্যবহার করে মাঝে মাঝে
ফ্রিজের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা উচিত। যদি তাপমাত্রা ঠিকমতো বজায় থাকে, তাহলে
ফ্রিজের আয়ু বৃদ্ধি পাবে, খাবার দীর্ঘদিন টাটকা থাকবে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকিও
অনেকাংশে কমে যাবে। অতএব, ফ্রিজ ব্যবহারে সচেতন থাকা এবং তাপমাত্রা নিয়মিত
পরীক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা পরবর্তীতে জানবো ফ্রিজের তাপমাত্রা
পরীক্ষা করার উপায় সম্পর্কে।
ফ্রিজ এবং ফ্রিজারের তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য কি?
প্রিয় পাঠকবৃন্দ আমরা উপরে জেনে এসেছি যে, বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের
উপযুক্ত তাপমাত্রা কত হওয়া উচিত। চলুন এবার জেনে আসা যাক ফ্রিজ এবং ফ্রিজারের
তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য কি?
অনেকেই ফ্রিজ আর ফ্রিজারকে এক মনে করেন, কিন্তু বাস্তবে দুটির মধ্যে উল্লেখযোগ্য
পার্থক্য রয়েছে। ফ্রিজ মূলত খাবার সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয় যেখানে তাপমাত্রা
হালকা ঠান্ডা থাকে এবং সেখানে কোনো খাবার বরফের মতো জমে থাকেনা আর যার তাপমাত্রা
প্রায় ৩-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফ্রিজের এই তাপমাত্রা খাবারকে কিছুদিনের জন্য টাটকা
রাখে এবং ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ধীর করে। ফলে, প্রতিদিনের ব্যবহারের খাবার, যেমন
দুধ, ফল, সবজি ইত্যাদি ফ্রিজে রাখা হয়।
অন্যদিকে, ফ্রিজার হলো এমন একটি অংশ যেখানে তাপমাত্রা অনেক কম, সাধারণত -১৮
ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই কম তাপমাত্রা জীবাণু বৃদ্ধির পুরো পরিবেশ নষ্ট করে দেয়,
ফলে মাছ, মাংস, বরফ, আইসক্রিম ইত্যাদি অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকে। ফ্রিজারের
তাপমাত্রা এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় যাতে খাবার হিমায়িত অবস্থায় থাকে এবং পচে
যাওয়ার ঝুঁকি থাকে না।
ফ্রিজ ও ফ্রিজারের ব্যবহারের পদ্ধতিতেও পার্থক্য রয়েছে। ফ্রিজের দরজা আমরা দিনে
কয়েকবার খুলি এবং বন্ধ করি, ফলে এর ভেতরের তাপমাত্রায় পরিবর্তন আসে। কিন্তু
ফ্রিজারের দরজা তুলনামূলক কম খোলা হয়, তাই এর তাপমাত্রা অধিকাংশ সময়ে স্থিতিশীল
থাকে। এ কারণেই ফ্রিজারের খাবার বেশি দিন টিকতে পারে। তাই বুঝতে হবে, কোন ধরনের
খাবার কোন অংশে রাখতে হবে। রোজকার ব্যবহারের খাবার ফ্রিজে রাখুন, আর দীর্ঘমেয়াদী
সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজার ব্যবহার করুন। সঠিক অংশে সঠিক তাপমাত্রায় খাবার রাখলে
খাবারের মান ভালো থাকবে এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেক কমে যাবে।
কেন সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা জরুরি?
রেফ্রিজারেটরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা অনেক গুরুত্ব। শুধু খাবারের মান রক্ষা
নয়, বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক সুবিধা এবং যন্ত্রের
স্থায়িত্ব। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক কেন সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা জরুরি?
খাবারের মান বজায় রাখা:
খাবারের স্বাদ, রং এবং পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে ফ্রিজের সঠিক তাপমাত্রা অপরিহার্য।
যদি ফ্রিজ যথেষ্ট ঠান্ডা না থাকে, তাহলে দুধ দ্রুত টক হয়ে যেতে পারে, ফলমূল নরম
ও পচে যেতে পারে। আবার অতিরিক্ত ঠান্ডায় ফলমূল শুকিয়ে যেতে পারে বা জমে বরফ
হয়ে যেতে পারে। তাই প্রতিটি খাবারের জন্য নির্দিষ্ট ঠান্ডা পরিবেশ দরকার যাতে তা
দীর্ঘদিন টাটকা থাকে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা:
ফ্রিজের সঠিক তাপমাত্রা স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বড় ভূমিকা রাখে। কম তাপমাত্রায়
ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে না। যদি তাপমাত্রা ঠিকমতো না থাকে, তবে খাবারে
ব্যাকটেরিয়া যেমন স্যালমোনেলা বা ই-কোলাই জন্মাতে পারে, যা খাদ্যে বিষক্রিয়া বা
ফুড পয়জনিংয়ের কারণ হতে পারে। তাই পরিবারের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা ঠিক রাখা খুবই জরুরি।
বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা:
ঠিকমতো তাপমাত্রা বজায় রাখলে রেফ্রিজারেটর স্বাভাবিকভাবে কাজ করে এবং কম্প্রেসার
অতিরিক্ত কাজ করতে হয় না। ফলে বিদ্যুৎ খরচও কম হয়। অতিরিক্ত ঠান্ডা করার চেষ্টা
করলে শুধু বিদ্যুৎ বিলই বাড়বে না, বরং পরিবেশের উপরেও খারাপ প্রভাব পড়বে। তাই
বিদ্যুৎ বিল কমাতে এবং পরিবেশ রক্ষায় সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা প্রয়োজন।
রেফ্রিজারেটরের স্থায়িত্ব বাড়ানো:
ফ্রিজের যন্ত্রাংশ, বিশেষ করে কম্প্রেসার, অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম অবস্থায় দ্রুত
নষ্ট হতে পারে। সঠিক তাপমাত্রায় রাখলে যন্ত্রাংশের উপর চাপ কম পড়ে এবং ফ্রিজ
দীর্ঘদিন ঠিকঠাক চলে। এটি আপনাকে অপ্রয়োজনীয় মেরামত খরচ থেকে বাঁচাতে সহায়ক
হবে এবং ফ্রিজের আয়ুও বাড়াবে।
ফ্রিজের বিভিন্ন অংশের জন্য কি আলাদা তাপমাত্রা প্রয়োজন?
বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত, এটি বুঝতে গেলে
প্রথমেই জানতে হবে যে ফ্রিজের ভেতরের সব অংশের জন্য এক রকম তাপমাত্রা সবসময় ঠিক
থাকে না। সাধারণত ফ্রিজের ওপরের অংশে ঠান্ডার মাত্রা বেশি থাকে, যেখানে বরফ জমে।
নিচের দিকে আসতে আসতে ঠান্ডার মাত্রা কিছুটা কমে যায়। তাই বিভিন্ন খাবার বা পণ্য
সংরক্ষণের জন্য আলাদা তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। যেমন দুধ বা মাছ-মাংস রাখতে গেলে
ফ্রিজের সবচেয়ে ঠান্ডা অংশে রাখা উচিত। অন্যদিকে ফলমূল বা শাকসবজি সংরক্ষণের
জন্য তুলনামূলক কম ঠান্ডা দরকার, যাতে এগুলো দ্রুত বরফে জমে না যায়। এই কারণেই
অনেক ফ্রিজে আলাদা আলাদা চেম্বার বা ড্রয়ার দেওয়া থাকে। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত
রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত, সেটা নির্ভর করে আপনি কোন খাবার কোথায়
রাখছেন তার উপরও।
আমরা উপরে জেনে এসেছি, রেফ্রিজারেটরের উপরের দিকের সেকশনে সাধারণত -১৮ ডিগ্রি
সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা থাকে, যাকে আমরা ডিপ ফ্রিজ বলি। এখানে মূলত
দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণের জন্য মাংস, মাছ ইত্যাদি রাখা হয়। আবার ফ্রিজের মূল
চেম্বারে তাপমাত্রা থাকে ৩ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে, যা দুধ, রান্না করা
খাবার ও কাঁচা সবজি সংরক্ষণের জন্য উপযুক্ত। আর নিচের দিকে থাকা ভেজিটেবল বক্স বা
ক্রিসপার ড্রয়ারের জন্য তুলনামূলক বেশি তাপমাত্রা রাখা হয়, যাতে ফলমূল সতেজ থাকে
এবং ঠান্ডায় নষ্ট না হয়। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা
কত সেটি ঠিকভাবে জানা না থাকলে খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে অথবা স্বাস্থ্য
ঝুঁকি বাড়তে পারে।
অনেক আধুনিক রেফ্রিজারেটরে এখন স্মার্ট সেন্সর থাকে, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন
অংশের তাপমাত্রা মাপতে এবং সামঞ্জস্য করতে পারে। তবে যাদের পুরোনো মডেলের ফ্রিজ
আছে, তাদের জন্য এই বিষয়গুলো জানা বিশেষ জরুরি। প্রতিটি খাবারের জন্য নির্ধারিত
তাপমাত্রা মানা না হলে খাবারের স্বাদ নষ্ট হতে পারে, ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে
এবং খাদ্য বিষক্রিয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়। বিশেষ করে বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত
রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত, তা নির্দিষ্ট করে রাখলে আপনার খাবার
দীর্ঘদিন ভালো থাকবে এবং বিদ্যুৎ খরচও কম হবে। তাই শুধু ফ্রিজ অন করে রাখলেই চলবে
না, এর ভেতরের প্রতিটি অংশের তাপমাত্রা বোঝা ও ঠিক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তাই সচেতনতার সাথে ফ্রিজের প্রতিটি স্তরের তাপমাত্রা ঠিক করতে হবে। বাসা বাড়িতে
ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত, এই বিষয়ে সচেতন থাকলে শুধু খাবার
ভালো থাকবে না, আপনার ফ্রিজের আয়ুও দীর্ঘ হবে এবং রক্ষণাবেক্ষণ খরচও কমে আসবে।
গরম আবহাওয়ায় রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা কেমন রাখা উচিত?
গ্রীষ্মকালে যখন বাইরের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায়, তখন রেফ্রিজারেটর সঠিকভাবে
চলা এবং খাবার সংরক্ষণ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ে। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত
রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত, সেটা গরম আবহাওয়ায় সামান্য পরিবর্তন করতে
হয়। সাধারণভাবে, ফ্রিজের মেইন অংশে ৩ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ডিপ ফ্রিজে -১৮
ডিগ্রি সেলসিয়াস বজায় রাখা ভালো। তবে খুব বেশি গরম পড়লে, ফ্রিজের তাপমাত্রা
সামান্য কমিয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি নিয়ে আসা উচিত, যাতে খাবার তাজা
থাকে এবং দ্রুত নষ্ট না হয়। আবার ডিপ ফ্রিজের ক্ষেত্রেও তাপমাত্রা -২০ ডিগ্রি
সেলসিয়াসের কাছাকাছি আনলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
রেফ্রিজারেটর বেশি খোলামেলা রাখা উচিত নয় গরমের দিনে। বারবার ফ্রিজের দরজা
খোলা-বন্ধ করা হলে ভিতরের ঠান্ডা বেরিয়ে যায় এবং ফ্রিজ অতিরিক্ত চাপ নিয়ে
ঠান্ডা করতে থাকে, যা বিদ্যুৎ খরচ বাড়ায়। পাশাপাশি বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত
রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত সেটা নিরীক্ষণ করতে মাঝে মাঝে থার্মোমিটার
ব্যবহার করা যেতে পারে। ফ্রিজের ভেতরে আলাদা থার্মোমিটার রাখলে আপনি সহজেই দেখতে
পারবেন তাপমাত্রা ঠিক আছে কিনা। গরমের সময় ফ্রিজের ভেতরের খাবার যত কম নাড়াচাড়া
করা যায় তত ভালো, এতে ঠান্ডার ভারসাম্য বজায় থাকে এবং খাবারের গুণগত মান
অক্ষুণ্ন থাকে।
গরমের সময়ে ফ্রিজের অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ। ফ্রিজ এমন জায়গায় রাখা উচিত যেখানে
সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে না। রেফ্রিজারেটরের চারপাশে অন্তত ৩-৪ ইঞ্চি ফাঁকা
জায়গা থাকতে হবে, যাতে এর কম্প্রেসর ঠিকভাবে কাজ করতে পারে এবং অতিরিক্ত গরম না
হয়। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত, সেটা মাথায় রেখে
যদি ফ্রিজের স্থান নির্বাচন করা হয়, তাহলে ফ্রিজ সহজেই খাবার ঠান্ডা রাখতে পারবে
এবং দীর্ঘদিন ভালো সার্ভিস দেবে। এছাড়া ফ্রিজের পিছনের কনডেনসার কয়েল নিয়মিত
পরিষ্কার করা উচিত, যাতে এটি অতিরিক্ত গরম না হয় এবং কার্যক্ষমতা ঠিক থাকে।
অনেকে ভাবেন গরমে ফ্রিজের কুলিং বাড়াতে ফ্রিজের সেটিংস একদম সর্বনিম্ন
তাপমাত্রায় নামিয়ে দেওয়া উচিত। কিন্তু এটি ঠিক নয়। কারণ অতিরিক্ত ঠান্ডা খাবারে
বরফের আস্তরণ তৈরি করতে পারে, যা খাবারের স্বাদ ও গুণগত মান নষ্ট করে। বরং, বাসা
বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত, সেটি বুঝে
বিজ্ঞানসম্মতভাবে সামঞ্জস্য করে নেওয়া উচিত। মাঝেমধ্যে ফ্রিজের দরজা বন্ধ করে
রাখার পাশাপাশি, দরজার রবার গ্যাসকেটগুলো ঠিকঠাক আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে, যাতে
ঠান্ডা হাওয়া বাইরে চলে না যায়। সচেতনভাবে এসব ব্যবস্থা নিলে গরম আবহাওয়াতেও
আপনার ফ্রিজ খাবার সতেজ ও নিরাপদ রাখবে।
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা কিসের উপর নির্ভর করে?
বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত তা নির্ভর করে কিছু
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর। রেফ্রিজারেটরের ভেতরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে হলে আমাদের
কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। কারণ রেফ্রিজারেটরের কার্যকারিতা, খাবার সংরক্ষণের
নিরাপত্তা এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়-সবই এই তাপমাত্রার সঠিকতার উপর নির্ভর করে। চলুন
দেখে নেওয়া যাক, কোন কোন বিষয় রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা নির্ধারণে ভূমিকা রাখে।
বাইরের আবহাওয়া এবং ঘরের তাপমাত্রা:
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা অনেকাংশে নির্ভর করে বাইরের আবহাওয়ার উপর। গরমকালে যখন
ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, তখন রেফ্রিজারেটরকে বেশি পরিশ্রম করতে হয় ভেতরের
ঠান্ডা ধরে রাখতে। আবার শীতকালে বাইরের তাপমাত্রা কম থাকায় রেফ্রিজারেটর
স্বাভাবিকভাবেই কম পরিশ্রম করে। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত
তাপমাত্রা কত সেটি ঠিক করতে হলে অবশ্যই ঘরের পরিবেশের উপর নজর রাখতে হবে।
অতিরিক্ত গরমে রেফ্রিজারেটরের ভেতরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে, ফলে খাবার দ্রুত নষ্ট
হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। তাই বছরের ভিন্ন ঋতু অনুযায়ী রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা
সামান্য পরিবর্তন করা বুদ্ধিমানের কাজ।
রেফ্রিজারেটরের লোড বা ভেতরের মালামালের পরিমাণ:
আপনার রেফ্রিজারেটরের ভেতরে কতটা খাবার বা পণ্য রাখা হয়েছে, সেটাও তাপমাত্রার উপর
প্রভাব ফেলে। যদি রেফ্রিজারেটর খুব বেশি ভরে ফেলা হয়, তখন এয়ার ফ্লো বাধাগ্রস্ত
হয় এবং ভেতরের তাপমাত্রা ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। অন্যদিকে যদি
রেফ্রিজারেটর একেবারে খালি থাকে, তখনও তাপমাত্রা স্থিতিশীল রাখতে মেশিনকে বেশি
কাজ করতে হয়। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত হওয়া
উচিত, তা নির্ধারণের সময় এই দিকটিও বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। একটি মধ্যম লোড বজায়
রাখা সর্বোত্তম বলে মনে করা হয়, যাতে ঠান্ডা সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং খাবার
দীর্ঘদিন ভালো থাকে।
দরজা খোলার হার এবং সময়:
রেফ্রিজারেটরের দরজা যদি বারবার খোলা হয়, অথবা একবার খোলার পর দীর্ঘক্ষণ খোলা
রাখা হয়, তাহলে ভেতরের ঠান্ডা হাওয়া বেরিয়ে যায় এবং তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়।
বিশেষ করে গরমের দিনে এই সমস্যা আরো প্রকট হয়। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত
রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত তা নিশ্চিত করতে দরজা খোলার সংখ্যা কমানো
এবং দরজা খোলা সময় কমিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরি। দরজা যত বেশি খোলা হবে, তাপমাত্রা
পুনরায় স্বাভাবিক করতে রেফ্রিজারেটরকে তত বেশি সময় এবং শক্তি ব্যয় করতে হয়। ফলে
বিদ্যুৎ খরচও বেড়ে যায় এবং যন্ত্রপাতির আয়ু কমে যেতে পারে।
রেফ্রিজারেটরের বয়স এবং প্রযুক্তিগত মান:
রেফ্রিজারেটর কতদিন ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং সেটির প্রযুক্তি কতটা আধুনিক, তার
উপরও তাপমাত্রা নির্ভর করে। পুরনো রেফ্রিজারেটরগুলো সাধারণত বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে
এবং ভেতরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে কষ্ট হয়। আধুনিক প্রযুক্তির রেফ্রিজারেটর, যেমন
ইনভার্টার প্রযুক্তি যুক্ত মডেলগুলো, কম বিদ্যুৎ খরচে স্থায়ী তাপমাত্রা বজায়
রাখতে সক্ষম। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত হবে তা
নিশ্চিত করতে হলে অবশ্যই রেফ্রিজারেটরের বর্তমান অবস্থা এবং ব্যবহৃত প্রযুক্তির
মান বুঝে নিতে হবে। সময়মতো রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রয়োজনে মডেল আপগ্রেড করাও একটি
ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে।
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা মাপার সঠিক উপায় কি?
রেফ্রিজারেটরের সঠিক তাপমাত্রা নির্ণয় করা অত্যন্ত জরুরি, কারণ এর উপর নির্ভর করে
খাবারের সতেজতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের
উপযুক্ত তাপমাত্রা কত তা নিশ্চিত করার জন্য সঠিকভাবে তাপমাত্রা মাপা প্রয়োজন।
অনেক সময় চোখে দেখে বোঝা যায় না ভেতরের ঠান্ডার অবস্থা ঠিক আছে কিনা। তাই চলুন
জেনে নেই, কিভাবে সহজে ও কার্যকরভাবে রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা মাপা যায়।
-
থার্মোমিটার ব্যবহার করা: রেফ্রিজারেটরের ভেতরের প্রকৃত তাপমাত্রা
জানার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হলো থার্মোমিটার ব্যবহার করা। বাজারে ফ্রিজ
বা রেফ্রিজারেটর মাপার জন্য আলাদা থার্মোমিটার পাওয়া যায়। একটি থার্মোমিটার
রেফ্রিজারেটরের মাঝখানে রেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। ৫-৬ ঘণ্টা পর
থার্মোমিটারটি দেখুন সেখানে কত তাপমাত্রা দেখাচ্ছে। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত
রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত তা যাচাই করার জন্য এই মাপ সবচেয়ে
নির্ভরযোগ্য। সাধারণত ফ্রিজের তাপমাত্রা ১-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে থাকা
উচিত।
-
পানির গ্লাস পরীক্ষা: একটি সাধারণ পরীক্ষার মাধ্যমে তাপমাত্রা যাচাই
করা যায়। একটি কাচের গ্লাসে পানি ভর্তি করে সেটি রেফ্রিজারেটরের মাঝখানে
রাখুন। ২৪ ঘণ্টা পরে পানির তাপমাত্রা পরিমাপ করুন। যদি পানির তাপমাত্রা ১-৪
ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা
ঠিক আছে। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত তা এই
পদ্ধতির মাধ্যমেও সহজে নিশ্চিত করা যায়। তবে এই পদ্ধতিতে একটু সময় বেশি লাগে
তবে কার্যকর বটে।
-
খাবারের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা: খাবার যদি অল্প সময়েই নরম হয়ে যায় বা
দুর্গন্ধ ছড়ায়, তাহলে বুঝতে হবে রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা ঠিক নেই। বিশেষ করে
দুধ, মাছ বা মাংস দ্রুত নষ্ট হলে সতর্ক হতে হবে। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত
রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত তা বোঝার জন্য খাবারের পরিবর্তন একটি
প্রাথমিক ইঙ্গিত দেয়। যদিও এটি সরাসরি মাপার পদ্ধতি নয়, তবে সতর্কতার জন্য এই
লক্ষণগুলো নজর রাখা জরুরি।
-
ডিজিটাল ডিসপ্লে ব্যবহার করা: বর্তমানে অনেক আধুনিক রেফ্রিজারেটরে
ডিজিটাল ডিসপ্লে থাকে যেখানে সরাসরি তাপমাত্রা দেখা যায়। ডিসপ্লেতে দেখানো
তাপমাত্রা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন। যদি তাপমাত্রা ১-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর
মধ্যে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত
তাপমাত্রা কত হওয়া উচিত তা বজায় আছে। যদি দেখেন তাপমাত্রা ওঠানামা করছে,
তাহলে সেটিংস চেক করুন বা মেরামতকারীর পরামর্শ নিন।
-
রেফ্রিজারেটরের নিজস্ব অ্যালার্ম ফিচার ব্যবহার: অনেক রেফ্রিজারেটর
মডেলে এমন প্রযুক্তি রয়েছে, যা তাপমাত্রা বেড়ে গেলে বা কমে গেলে অ্যালার্ম
দেয়। এই ফিচার ব্যবহার করে সহজেই তাপমাত্রার ওঠানামা সম্পর্কে জানা যায়। বাসা
বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত তা নিশ্চিত করতে হলে এই
অ্যালার্ম সিস্টেম বড় সাহায্য করতে পারে। তবে সব মডেলে এই সুবিধা থাকে না,
তাই কেনার সময় এটি খেয়াল করা ভালো।
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা বেশি বা কম হলে কি সমস্যা হতে পারে?
রেফ্রিজারেটরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি তাপমাত্রা
নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি বা কম হয়, তাহলে তা খাবারের মান নষ্ট করা থেকে শুরু
করে স্বাস্থ্যঝুঁকি পর্যন্ত সৃষ্টি করতে পারে। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত
রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত তা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে খাবার দীর্ঘদিন
সতেজ ও নিরাপদ থাকে। এখন চলুন দেখে নেওয়া যাক, তাপমাত্রা বেশি বা কম হলে কী কী
সমস্যা দেখা দিতে পারে।
-
খাবারের দ্রুত নষ্ট হওয়া: যদি রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা প্রয়োজনের
তুলনায় বেশি হয়, তবে খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে দুধ, মাংস,
মাছ, ডিম ইত্যাদি খাবার খুব সংবেদনশীল। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের
উপযুক্ত তাপমাত্রা কত তা ঠিক না থাকলে এসব খাবার পচে যায়, বদগন্ধ ছড়ায় এবং
খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে খাবারের অপচয় বেড়ে যায় এবং আর্থিক ক্ষতি হয়।
এছাড়া নষ্ট খাবার খেলে খাদ্যে বিষক্রিয়ার মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি
হতে পারে।
-
ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের বৃদ্ধি: রেফ্রিজারেটরের ভেতরের তাপমাত্রা যদি
৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর বেশি হয়ে যায়, তবে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক দ্রুত গজিয়ে
ওঠে। সালমোনেলা, ই-কোলাই, লিস্টেরিয়া ইত্যাদি জীবাণু সহজেই সংক্রমণ ঘটাতে
পারে। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত হওয়া উচিত
তা না মানলে খাবারে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার ঘটে এবং সেখান থেকে
খাদ্যবাহিত রোগ হতে পারে। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য
এটি ভয়ংকর ঝুঁকি তৈরি করে।
-
অতিরিক্ত বরফ জমা হওয়া: যদি রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা প্রয়োজনের
তুলনায় খুব কম হয়, বিশেষ করে ফ্রিজার অংশে, তবে অতিরিক্ত বরফ জমতে শুরু করে।
এতে রেফ্রিজারেটরের কার্যক্ষমতা কমে যায়, ঠান্ডা সমানভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে না
এবং বিদ্যুৎ খরচও বেড়ে যায়। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত
তাপমাত্রা কত তা সঠিক না থাকলে অতিরিক্ত বরফ জমে ফ্রিজের ভেতরের জায়গা নষ্ট
হয় এবং খাবারের গুণগত মান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
-
বিদ্যুৎ খরচ বৃদ্ধি এবং যন্ত্রের ক্ষতি: রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা যদি
বেশি বা কম থাকে, তাহলে কমপ্রেসরকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। এতে বিদ্যুৎ বিল
অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় এবং দীর্ঘমেয়াদে রেফ্রিজারেটরের যন্ত্রাংশ
ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত
তা বজায় রাখলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় এবং রেফ্রিজারেটরের আয়ু দীর্ঘ হয়। ভুল
তাপমাত্রা যন্ত্রের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, ফলে সময়ের আগেই মেরামতের
প্রয়োজন দেখা দিতে পারে অথবা নতুন রেফ্রিজারেটর কিনতে হতে পারে।
খাবার সংরক্ষণের জন্য সঠিক তাপমাত্রা কত?
খাবার সংরক্ষণে সঠিক তাপমাত্রা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি খাবারের পচন এবং
তার পুষ্টিগুণ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সহায়তা করে। সঠিক তাপমাত্রায় খাবার রাখলে তা
দীর্ঘ সময় ধরে সতেজ থাকে এবং জীবাণুর বৃদ্ধি কম হয়। বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত
রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত হওয়া উচিত তা জানলে আপনি স্বাস্থ্যকর এবং
নিরাপদ খাবার উপভোগ করতে পারবেন। সাধারণত, খাদ্য সংরক্ষণের জন্য রেফ্রিজারেটরের
তাপমাত্রা ১-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে থাকতে হবে।
কিভাবে বুঝবেন আপনার রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা ঠিক আছে?
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা সঠিকভাবে ঠিক আছে কিনা, তা জানাটা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। যদি রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা ঠিক না থাকে, তবে খাবার দ্রুত পচে
যেতে পারে, বা এর পুষ্টিগুণও হারিয়ে যেতে পারে। এজন্য কিছু বিশেষ পদ্ধতি রয়েছে,
যার মাধ্যমে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন আপনার রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা ঠিক আছে
কিনা। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায় সম্পর্কে আমরা আলোচনা করেছি যা অনুসরণ করলে
আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন যে রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা সঠিক রয়েছে।
থার্মোমিটার ব্যবহার করা:
থার্মোমিটার রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করার সবচেয়ে সহজ এবং নির্ভরযোগ্য
উপায়। থার্মোমিটারটি রেফ্রিজারেটরের ভিতরে মাঝখানে রাখুন এবং কিছু সময় পরে
পরীক্ষা করুন। সাধারণত, রেফ্রিজারেটরের সঠিক তাপমাত্রা ১-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর
মধ্যে থাকতে হবে। এই তাপমাত্রায় খাবার সংরক্ষণ করলে তা তাজা থাকে এবং
ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কম হয়। যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর বেশি হয়ে যায়,
তবে খাবার দ্রুত পচে যাবে। আর যদি ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর নিচে থাকে, তবে খাবার জমে
যেতে পারে, যা খাওয়ার জন্য ভাল না।
কনডেন্সেশন বা পানি জমা হওয়া লক্ষ্য করা:
রেফ্রিজারেটরের দরজার আশেপাশে পানি জমে থাকলে, এটি তাপমাত্রার অস্বাভাবিকতার
ইঙ্গিত হতে পারে। দরজার গ্যাসকেট সঠিকভাবে বন্ধ না হলে, ঠান্ডা বাতাস বাইরে চলে
যায় এবং তাপমাত্রা বাড়তে পারে। এর ফলে খাবারের গুণমানও কমে যেতে পারে। তাই,
রেফ্রিজারেটরের দরজা বন্ধ করার পর পানি জমা হওয়া বা কনডেন্সেশন না থাকার দিকে নজর
দিন।
খাবারের গুণমান পর্যবেক্ষণ করা:
আপনি যদি আপনার রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা সঠিক না হওয়ার কারণে খাবারের গুণমান কমে
যাচ্ছে বলে মনে করেন, তাহলে এটি তাপমাত্রার সমস্যা হতে পারে। যেমন, ফলমূল, দুধ বা
মাংসের গুণমান যদি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, তবে এটি ইঙ্গিত দেয় যে রেফ্রিজারেটরের
তাপমাত্রা সঠিক নয়। এছাড়া, যদি খাবারগুলোর পাত্রের মধ্যে বরফ জমে থাকে, তবে তাও
ঠান্ডার সমস্যা নির্দেশ করতে পারে।
রেফ্রিজারেটরের কম্প্রেসার পরীক্ষা করা:
রেফ্রিজারেটরের কম্প্রেসারও তাপমাত্রা ঠিক রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে। কম্প্রেসার যদি খুব বেশি সময় ধরে কাজ করে থাকে, তবে তাপমাত্রা খুব কম
হতে পারে এবং এটি খাবার জমিয়ে ফেলতে পারে। অন্যদিকে, যদি কম্প্রেসার খুব কম সময়
কাজ করে, তবে তাপমাত্রা বেশি হতে পারে। কম্প্রেসারের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে
আপনি তাপমাত্রার অবস্থা বুঝতে পারবেন।
ফ্রিজারের সঙ্গে রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রার সম্পর্ক:
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা সঠিক কিনা বুঝতে হলে, ফ্রিজারের তাপমাত্রাও পরীক্ষা
করুন। ফ্রিজারে খাবার খুব শক্ত হয়ে গেলে, এটি জানাবে যে তাপমাত্রা খুব কম। আবার,
যদি ফ্রিজারের মধ্যে বরফের স্তর খুব কম থাকে বা ফ্রিজারের খাবার তাজা থাকে না,
তবে তাপমাত্রা অনেক বেশি হতে পারে। এই পরিবর্তনগুলো পর্যবেক্ষণ করে, আপনি সহজেই
বুঝতে পারবেন যে আপনার রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা সঠিক আছে কিনা।
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা পরিবর্তনের কারণগুলো কি?
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা নানা কারণে পরিবর্তিত হতে পারে। চলুন জেনে আসা যাক
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা পরিবর্তনের মূল কারণগুলো সম্পর্কে।
-
রেফ্রিজারেটরের দরজা খোলা থাকলে ঠান্ডা বাতাস বাইরে চলে যায়, ফলে তাপমাত্রা
উর্ধ্বমুখী হতে থাকে। অনেক সময় আমরা খাবার নিতে বা বের করতে দরজা খুলি এবং তা
দীর্ঘ সময় খোলা থাকে, যা তাপমাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে খাবারগুলো
সঠিকভাবে সংরক্ষণ হতে পারে না। এই কারণে, দরজা খোলার সময় যতটা সম্ভব কম সময়
রাখতে হবে।
-
গ্যাসকেটের ত্রুটি যদি থাকে, তাহলে রেফ্রিজারেটরের দরজা সঠিকভাবে বন্ধ হয় না
এবং ঠান্ডা বাতাস বের হয়ে যায়। গ্যাসকেটের ক্ষতি হলে দ্রুত রেফ্রিজারেটর বন্ধ
হয়ে যেতে পারে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই ত্রুটির ফলে রেফ্রিজারেটর
সঠিকভাবে কাজ করে না, খাবারের স্বাদ ও পুষ্টি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সুতরাং,
গ্যাসকেট ঠিকঠাক রাখাটা খুবই জরুরি।
-
বিদ্যুৎ চলে গেলে রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা বদলে যায়। বিদ্যুৎ চলে গেলে
ফ্রিজের মধ্যে থাকা ঠান্ডা বাতাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং খাবারের মান
নষ্ট হতে পারে। বিশেষ করে গরম আবহাওয়ায় বিদ্যুৎ চলে গেলে খাবার পচে যেতে
পারে। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সময় রেফ্রিজারেটরের দরজা বন্ধ রাখলে খাবার কিছু
সময়ের জন্য সুরক্ষিত থাকে।
-
ফ্রিজে অতিরিক্ত খাবার রাখা রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা তৈরি
করতে পারে। যখন ফ্রিজে অনেক খাবার রাখা হয়, তখন ঠান্ডা বাতাস সঠিকভাবে সরাসরি
পৌঁছাতে পারে না এবং তাপমাত্রা ঠিকভাবে বজায় থাকে না। অতএব, রেফ্রিজারেটরের
ভেতর খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। অনেক খাবার রাখলে ঠান্ডা বাতাসের
সঠিক প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়।
বিভিন্ন ধরণের খাবারের জন্য আদর্শ তাপমাত্রা কত?
ফ্রিজে রাখা প্রতিটি খাবারের জন্য আলাদা তাপমাত্রা প্রয়োজন যাতে তা সঠিকভাবে
সংরক্ষণ করা যায়। চলুন জেনে তবে আসা যাক কোন খাবারের জন্য কত তাপমাত্রা প্রয়োজন
সেটি সম্পর্কে।
-
মাংস এবং মুরগি সংরক্ষণের জন্য আদর্শ তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪
ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে থাকা উচিত। বেশি তাপমাত্রায় মাংসের গুণগত মান কমে
যায় এবং দ্রুত পচে যেতে পারে। এজন্য মাংসের ক্ষেত্রে তাপমাত্রা সঠিকভাবে
নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
-
ফলমূল ও শাকসবজি সঠিকভাবে সংরক্ষণের জন্য ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৭ ডিগ্রি
সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রয়োজন। এই তাপমাত্রায় শাকসবজি ও ফলমূল অনেক দিন তাজা
থাকে এবং পচন বাধা পায়। তবে কিছু ফল যেমন কলা, টমেটো ও অ্যাভোকাডো সাধারণত
রুম তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা ভালো, কারণ ফ্রিজে রাখলে এরা ঠিকভাবে পেকে না।
-
দুধ এবং দুধজাত পণ্য গুলি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৫
ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা উচিত। দুধ, মাখন, পনির বা দই এসব খাবারের
মান ঠিক রাখতে হলে ফ্রিজের তাপমাত্রা সঠিক হওয়া জরুরি। দুধের প্যাকেট যদি
ফ্রিজে রেখে দেয় তবে সেটা দ্রুত পচে যেতে পারে, তাই দুধের উপযুক্ত তাপমাত্রায়
রাখা প্রয়োজন।
-
তাজা মাছ সংরক্ষণের জন্য সবচেয়ে কম তাপমাত্রা দরকার। তাজা মাছের জন্য আদর্শ
তাপমাত্রা ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে রাখা উচিত।
এভাবে মাছ তাজা থাকে এবং পচে যায় না। মাছের তাজাতা নিশ্চিত করতে ঠান্ডা
পরিবেশে সংরক্ষণ করা উচিত।
বাচ্চাদের জন্য খাবার সংরক্ষণে বাড়তি সতর্কতা
বাচ্চাদের খাবার সংরক্ষণে অনেক বেশি সতর্কতা প্রয়োজন কারণ তাদের শরীর খুবই
সংবেদনশীল। খাবার যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করা হয়, তবে তা তাদের স্বাস্থ্য সমস্যা
তৈরি করতে পারে। বাচ্চাদের জন্য তাজা খাবার রাখা গুরুত্বপূর্ণ। খাবার যত তাজা
থাকবে, তত ভালো। রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে রাখা উচিত।
খাবার গরম অথবা বাইরে রেখে না রেখে দ্রুত ঠান্ডা করার পর ফ্রিজে রাখা উচিত।
রান্না করা খাবার দ্রুত ঠান্ডা করার পরই ফ্রিজে রাখা উচিত। রান্না করা খাবার যদি
বেশি সময় গরম অবস্থায় থাকে, তাহলে এর মধ্যে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পেতে পারে। এ
কারণে খাবার ঠান্ডা হওয়ার পরই ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন।
অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে বিরত থাকা বাচ্চাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অস্বাস্থ্যকর খাবার যেমন অতিরিক্ত মিষ্টি বা তেলযুক্ত খাবার পচনশীল হয়ে দ্রুত
বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তাই এসব খাবার সঠিক তাপমাত্রায় রাখা জরুরি। খাবার
ঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে বাচ্চাদের শরীরে রোগ তৈরি হতে পারে। এছাড়া, বাচ্চাদের
খাবার পরিষ্কারভাবে প্রস্তুত করা এবং তাজা রাখতে হবে। খাবারের গুণগত মান ঠিক
রাখার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপই গুরুত্বসহকারে অনুসরণ করতে হবে। সঠিক তাপমাত্রায়
খাবার সংরক্ষণ করলে বাচ্চাদের জন্য খাবার স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ থাকে।
গরম খাবার সরাসরি ফ্রিজে রাখা কি উচিত?
আমরা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকি বা আমাদের মনের ভেতরে এক প্রকার প্রশ্ন থেকেই যায়,
গরম খাবার সরাসরি ফ্রিজে রাখা কি উচিত? গরম খাবার সরাসরি ফ্রিজে রাখা উচিত নয়।
গরম খাবার ফ্রিজে রাখলে তাপমাত্রা পরিবর্তিত হয়। এটি ফ্রিজের শক্তি কমাতে পারে
এবং ফ্রিজের অন্যান্য খাবারের নিরাপত্তা নষ্ট হতে পারে। খাবার গরম অবস্থায় রাখা
মানে তা দ্রুত ঠান্ডা হওয়ার বদলে, তাপমাত্রা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এই
কারণে, খাবার ঠান্ডা হতে কিছু সময় দেওয়া উচিত। গরম খাবারের তাপমাত্রা ফ্রিজের
তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং এর ফলে খাবারের মধ্যে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি হতে
পারে। তাই গরম খাবার ফ্রিজে রাখার আগে কিছু সময় ঠান্ডা হতে দিতে হবে, যাতে
ফ্রিজের তাপমাত্রা ঠিক থাকে।
গরম খাবার সরাসরি ফ্রিজে রাখলে ফ্রিজের ভিতরে ঠান্ডা বাতাসের সঠিক প্রবাহ
বাধাগ্রস্ত হয়, এবং এর ফলে খাবারের গুণমান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়া, তাপমাত্রা
ওঠানামা করার কারণে খাবারের পচনশীলতা বেড়ে যায়। তাই, খাবার ঠান্ডা না হলে তা
ফ্রিজে রাখলে তা অনেক বেশি বিপদজনক হতে পারে। এছাড়া, গরম খাবারের শীতল হওয়ার পরেই
তা ফ্রিজে রাখলে ফ্রিজে থাকা অন্যান্য খাবারও প্রভাবিত হতে পারে। ঠান্ডা হতে সময়
দিলে, ফ্রিজের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। খাবার সংরক্ষণে এ ধরনের অভ্যাস
অনেক বেশি কার্যকর।
বিদ্যুৎ চলে গেলে ফ্রিজের তাপমাত্রা কিভাবে বজায় রাখবেন?
বিদ্যুৎ চলে গেলে বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত তাপমাত্রা কত তা
বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যুৎ চলে গেলে রেফ্রিজারেটরের ভিতরের ঠান্ডা বাতাস
বাইরে চলে যেতে থাকে, যার ফলে তাপমাত্রা দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে। এই
পরিস্থিতিতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তাপমাত্রা যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রিত রাখা সম্ভব।
চলুন তবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
-
ফ্রিজের দরজা বন্ধ রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যুৎ চলে গেলে ফ্রিজের দরজা
যতটা সম্ভব কম সময়ের জন্য খোলা রাখুন। এতে ফ্রিজের তাপমাত্রা দীর্ঘ সময়
স্থিতিশীল থাকে এবং খাবার সুরক্ষিত থাকে। ফ্রিজের তাপমাত্রা সঠিকভাবে বজায়
রাখার জন্য দরজা খোলার সময় যতটা সম্ভব দ্রুত খাবার নিতে হবে।
-
ফ্রিজে থাকা খাবার বেশি না রাখা ফ্রিজের তাপমাত্রা বজায় রাখে। যদি ফ্রিজে
অনেক খাবার থাকে, তাপমাত্রা ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই,
বিদ্যুৎ চলে গেলে ফ্রিজের ভিতরে অতিরিক্ত খাবার রাখা থেকে বিরত থাকুন। তবে,
কিছু খাবার যদি দ্রুত পচে যায়, সেগুলো আলাদা করে রাখুন।
-
বরফ তৈরি করা খাবারের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করে। বেশ কিছু ফ্রিজে বরফ
তৈরি করার জায়গা থাকে। বিদ্যুৎ চলে গেলে, তা প্রাকৃতিকভাবে খাবারের তাপমাত্রা
রক্ষায় সাহায্য করে। কিছু ফ্রিজে ‘ফ্রস্ট ফ্রি’ প্রযুক্তি থাকে, যা তাপমাত্রা
দীর্ঘ সময় ধরে বজায় রাখে। তবে, ফ্রিজের তাপমাত্রা সঠিকভাবে বজায় রাখতে হবে
যাতে খাবারের পচন না হয়।
শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠকবৃন্দ আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলের একদম শেষ অংশে চলে এসেছি এবং আমরা
শেষ মন্তব্য হিসেবে বলতে পারি যে, বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের উপযুক্ত
তাপমাত্রা ১-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়া উচিত। তাপমাত্রা যদি খুব বেশি বা কম হয়,
তাহলে খাবারের পচনশীলতা বৃদ্ধি পায়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই,
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া,
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সময় সতর্কতা
অবলম্বন করা প্রয়োজন। একই সাথে ফ্রিজ নিয়মিত পরিষ্কার সহ ফ্রিজের প্রতি যত্নশীল
হতে এবং এটিকে নিজের পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। ফ্রিজের
তাপমাত্রা সঠিকভাবে বজায় রাখতে কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললে, খাবার দীর্ঘ সময় তাজা
ও নিরাপদ থাকবে। এটি আপনার পরিবারের স্বাস্থ্য রক্ষা করবে এবং আপনার খাবারের
গুণগত মান বজায় রাখবে। সঠিক তাপমাত্রায় খাবার সংরক্ষণ করলে তা দীর্ঘ সময় তাজা
থাকে এবং নিরাপদভাবে খাওয়া যায়।
BLOGGER BD-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url