আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আপনি কি জানেন, গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি? এবং খেলে
কতটুকু খাওয়া উচিত? যদি না জেনে থাকেন তবে আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ
পড়ুন।
গর্ভাবস্থা একজন নারীর জীবনে এক বিশেষ সময়। এ সময় প্রতিটি খাবারের উপাদান
গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তা সরাসরি প্রভাব ফেলে মায়ের ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যে। এখন
প্রশ্ন হচ্ছে- গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়া কি নিরাপদ? চলুন এর উত্তর খোঁজা যাক।
পোস্ট সূচিপত্র: গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা
অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন, গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়া যাবে কি, আবার অনেকে
জানতে চান গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে, আবার কেউ
কেউ গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কেও জানতে চেয়ে থাকে। আমরা
আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে পোস্ট সূচিপত্রের দেওয়া প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে
আলোচনা করবো। তাই চলুন আর দেরি না করে মূল আলোচনা শুরু করা যাক।
গর্ভাবস্থা একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল সময়। এই সময় শরীরে
নানা ধরনের পরিবর্তন আসে, যার ফলে প্রয়োজন পড়ে সঠিক পুষ্টি এবং সুরক্ষিত
খাদ্যাভ্যাসের। আমড়া, একটি দেশি ফল হলেও এর পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা
এতটাই বেশি যে, গর্ভবতী মায়েদের জন্য এটি একটি প্রকৃতির বিশাল উপহার। টক-মিষ্টি
স্বাদের এই ফলটি শুধু মুখরোচকই নয়, বরং এটি শরীরের ভেতরে অনেক কাজেও আসে। বিশেষ
করে গর্ভাবস্থায় অনেক মায়েরই খাওয়ার রুচি কমে যায়, কিন্তু আমড়া খেলে রুচি
বাড়ে, পেট ভালো থাকে এবং শরীর সতেজ বোধ করে।
এই ফলটি গর্ভাবস্থায় খেলে শুধুমাত্র মা নয়, গর্ভস্থ শিশুরও বিভিন্নভাবে উপকার হয়।
ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ সব মিলিয়ে আমড়া এক বিশাল
স্বাস্থ্যসম্পদ হিসেবে বিবেচিত। তবে যেহেতু এটি গর্ভকালীন সময়ে খাওয়ার বিষয়ে, তাই
শুধু ফলটি ভালো বললেই হবে না; বরং জানতে হবে, এটি ঠিক কীভাবে, কতটুকু, এবং কোন
উপকারে আসে। নিচে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার
উপকারিতা নিয়ে, চলুন জেনে নেই:
গর্ভকালীন বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। এমন সময়
যেকোনো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। আমড়ায় থাকা
প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী
করতে সাহায্য করে। এর ফলে সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইনফেকশন
প্রতিরোধে শরীর সক্ষম হয়। বিশেষ করে আমড়ার মধ্যে থাকা ‘অ্যাসকরবিক অ্যাসিড’ শরীরে
সাদা রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়ায়। এই রক্ত কণিকা ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে
কাজ করে। গর্ভকালীন সময়ে মা সুস্থ থাকলে, তার ভেতরে থাকা শিশুটিও সুস্থভাবে বেড়ে
ওঠে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত অল্প পরিমাণে আমড়া খাওয়া বেশ উপকারি।
হজমে সহায়ক ও বমিভাব কমায়:
গর্ভাবস্থায় মায়েদের একটি সাধারণ সমস্যা হলো হজমের সমস্যা এবং সকালবেলা বমিভাব বা
‘মর্নিং সিকনেস’। আমড়ায় থাকা প্রাকৃতিক ফাইবার পেট পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে এবং
হজমে সহায়তা করে। এটি গ্যাস্ট্রিক, অম্বল এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেও রক্ষা করে, যা
অনেক গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে সাধারণ সমস্যা। সকালে খালি পেটে হালকা পরিমাণে লবণ
বা চিনি মিশিয়ে আমড়া খেলে বমি বমি ভাব কমে যায় এবং রুচি ফিরে আসে। এতে শরীর এক
ধরনের সতেজতা অনুভব করে এবং দিনটিও ভালো কাটে। হজমশক্তি ভালো থাকলে মায়ের শরীরে
প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলো সহজে শোষিত হয়, ফলে শিশুও সঠিকভাবে বৃদ্ধি পায়।
রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়ক:
গর্ভাবস্থায় মায়ের দেহে রক্তের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং অনেক সময় আয়রনের ঘাটতি দেখা
দেয়, যার ফলে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি বাড়ে। আমড়া আয়রন শোষণে সাহায্য
করে; কারণ এতে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি। আমরা জানি, ভিটামিন সি আয়রনের শোষণ
ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় শরীরে, ফলে খাওয়ার সঙ্গে থাকা আয়রনজাতীয় খাবার সহজেই রক্তে
পরিণত হয়। রক্তশূন্যতা গর্ভস্থ শিশুর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। এতে শিশুর
বুদ্ধিমত্তা ও শরীরের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। তাই প্রতিদিন এক বা দুইটি আমড়া খেলে
ভিটামিন সি এর মাধ্যমে আয়রন গ্রহণের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং রক্তশূন্যতার
ঝুঁকি অনেকাংশে কমে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে:
গর্ভকালীন সময়ে অনেক মায়ের রক্তচাপ বেড়ে যায়, যাকে বলা হয় ‘প্রেগন্যান্সি
ইন্ডিউসড হাইপারটেনশন’। এটি অনেক সময় মারাত্মক পর্যায়ে গিয়েও মায়ের ও শিশুর জন্য
ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। আমড়ায় থাকা পটাশিয়াম উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
পটাশিয়াম শরীরের সোডিয়াম ব্যালান্স করে এবং রক্তনালীকে নমনীয় রাখে। ফলে রক্ত
চলাচল স্বাভাবিক থাকে এবং রক্তচাপ স্থিতিশীল থাকে। নিয়মিত অল্প পরিমাণে আমড়া খেলে
এই প্রাকৃতিক খনিজ উপাদানটি শরীরে সক্রিয় থাকে, যা গর্ভাবস্থায় নিরাপদ রক্তচাপ
বজায় রাখতে সহায়তা করে।
গর্ভস্থ শিশুর হাড় ও দাঁত গঠনে সহায়ক:
গর্ভকালীন সময়ে শিশুর হাড় ও দাঁতের গঠন শুরু হয় দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকে। এই সময়
মায়ের শরীরে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের প্রয়োজন পড়ে। আমড়া হলো একটি
প্রাকৃতিক উৎস, যাতে এই দুটি খনিজই উপস্থিত। আমড়ায় থাকা ক্যালসিয়াম শিশুদের হাড়
মজবুত করতে সাহায্য করে এবং দাঁতের গঠন সঠিকভাবে গড়ে তোলে। এছাড়াও আমড়ায় থাকা
ভিটামিন সি ক্যালসিয়ামের শোষণ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এই কারণে অনেক চিকিৎসক
গর্ভাবস্থায় মায়েদের আমড়া খেতে পরামর্শ দেন। তবে সবসময় মনে রাখতে হবে,
খাদ্যাভ্যাসের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। অতিরিক্ত খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই
প্রতিদিন এক বা দুইটি পাকা আমড়া খাওয়া যথেষ্ট উপকারি।
চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে:
গর্ভাবস্থায় মায়েদের চোখে সমস্যা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। চোখে ঝাপসা দেখা, পানি
পড়া বা চোখের ক্লান্তি খুব সাধারণ সমস্যা। আমড়ায় উপস্থিত ভিটামিন এ এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এই
উপাদানগুলো চোখের কোষকে রক্ষা করে এবং দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। একটি সুস্থ দৃষ্টি
শুধু মায়ের জন্যই নয়, গর্ভস্থ শিশুর জন্যও জরুরি। কারণ গর্ভাবস্থায় যেকোনো
অপুষ্টি ভবিষ্যতে শিশুর চোখে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই এমন ফল নির্বাচন করা
উচিত যেটা চোখের যত্নে কাজ করে। আমড়া সেই দিক থেকে অত্যন্ত কার্যকরী একটি দেশি
ফল।
ক্লান্তি ও মানসিক চাপ কমায়:
গর্ভাবস্থায় অনেক নারী মানসিক চাপে ভোগেন। হরমোনের পরিবর্তন, শরীরের ভার, বিভিন্ন
শারীরিক সমস্যা সব মিলিয়ে একজন নারী ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। আমড়ার ভেতরে
থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান এবং ভিটামিন সি এই ক্লান্তি দূর করতে
সাহায্য করে। এটি শরীরকে সতেজ রাখে এবং মনের চাপ কিছুটা হলেও লাঘব করে। এছাড়াও
আমড়ায় থাকা “ফ্ল্যাভোনয়েড” নামক উপাদান মস্তিষ্কের কোষে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়িয়ে
দেয়, ফলে মন ভালো থাকে ও মনোযোগ বাড়ে। দিনে একবার আমড়া খাওয়া মানসিক প্রশান্তির
জন্য কার্যকর হতে পারে। তবে সবসময় নিজের শরীরের প্রতিক্রিয়া বুঝে খাওয়া উচিত।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে:
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি মায়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তবে আবার
এমনটাও নয় যে এই সময় ডায়েট করতে হবে। বরং পুষ্টিকর কিন্তু কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার
খাওয়া উচিত। আমড়া এমনই একটি ফল, যার ক্যালোরি কম হলেও পুষ্টি বেশি। এটি খেলে পেট
ভরা থাকে, ক্ষুধা কমে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। এছাড়াও আমড়ায় থাকা
ফাইবার হজমশক্তি বাড়ায় এবং শরীরের চর্বি জমতে বাধা দেয়। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে
এবং গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিও কমে যায়। অতএব, যারা
স্বাস্থ্য সচেতন এবং ওজন নিয়ে চিন্তিত, তারা নির্ভয়ে এই ফলটি খাদ্যতালিকায় রাখতে
পারেন।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য আমড়ার ভিটামিন সি এর গুরুত্ব
প্রিয় পাঠক আমরা উপরে বিস্তারিতভাবে জেনে নিলাম, গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার
উপকারিতা সম্পর্কে। তবে আমাদের এই আলোচনা এখনো শেষ হয়নি। আমাদের পরবর্তী পয়েন্টটা
হচ্ছে- গর্ভবতী মায়েদের জন্য আমড়ার ভিটামিন সি এর গুরুত্ব। চলুন তবে জেনে আসি
এই বিষয়টা সম্পর্কে।
আমরা উপরে জেনেছি যে, গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন আসে। এই
সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একটু দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে ভাইরাস,
ব্যাকটেরিয়া কিংবা নানা ধরনের ইনফেকশনের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। এই সময়
শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী রাখতে ভিটামিন সি এর অবদান অনস্বীকার্য। আমাদের
আশেপাশে সহজলভ্য অনেক ফলেই এই পুষ্টি উপাদানটি পাওয়া যায়, তবে আমড়া হলো এমন
একটি ফল যাতে প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। গর্ভবতী মায়েদের
জন্য এটি একধরনের প্রাকৃতিক সুরক্ষা ঢাল হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিনের
খাদ্যতালিকায় পরিমাণমতো আমড়া রাখলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং
বিভিন্ন ইনফেকশন থেকে সুরক্ষা পাওয়া সম্ভব হয়। এই পুষ্টি উপাদানটি শুধুমাত্র
রোগ প্রতিরোধ নয়, বরং শরীরের কোষ মেরামত, চামড়ার স্বাস্থ্য এবং হাড় মজবুত
রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অনেকেই জানেন না যে গর্ভাবস্থায় ভিটামিন সি কেবল মায়ের জন্যই নয়, বরং গর্ভস্থ
শিশুর জন্যও অত্যন্ত উপকারি। এই ভিটামিন শিশুর হাড়, দাঁত, চামড়া এবং রক্তনালীর
গঠন প্রক্রিয়াকে সঠিকভাবে চালাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি প্লাসেন্টার
কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে, যা মায়ের শরীর থেকে শিশুর শরীরে পুষ্টি
পৌঁছানোর প্রক্রিয়াকে সহজ করে। আমড়া খেলে শরীরে প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন সি এর
সরবরাহ হয়, যা ফার্মেসির কৃত্রিম ট্যাবলেটের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ এবং
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন। ভিটামিন সি শরীরের আয়রন শোষণ ক্ষমতাও বাড়ায়। ফলে
মায়েদের মধ্যে রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে। গর্ভাবস্থায়
অনেক নারী আয়রনের ঘাটতিতে ভোগেন, তাই আমড়া খাওয়া আয়রনের কার্যকারিতা অনেকটাই
বাড়িয়ে দেয়। সর্বোপরি, আমড়া এমন একটি ফল যা শুধুমাত্র শরীর নয়, মনকেও সতেজ
রাখতে সহায়তা করে। মায়েরা যদি নিয়মিত পরিমাণ মতো এই ফলটি গ্রহণ করেন, তাহলে
গর্ভাবস্থার জটিলতাগুলো অনেকটাই সহজে মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
গর্ভাবস্থায় কতটুকু আমড়া খাওয়া উচিত
গর্ভাবস্থায় সব খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি। কারণ,
এই সময় একজন নারীর শরীরে শুধু তার নিজের জন্যই নয়, বরং গর্ভে থাকা শিশুর জন্যও
পুষ্টি নিশ্চিত করতে হয়। আমড়া একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল হলেও অতিরিক্ত খাওয়ার
ফলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই আমড়া খাওয়ার ক্ষেত্রে পরিমাণের নিয়ম অবশ্যই
মানা উচিত। সাধারণভাবে বলা যায়, গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ১-২টি মাঝারি আকারের
আমড়া খাওয়া নিরাপদ এবং উপকারি। মনে রাখতে হবে, আমড়া অত্যধিক টক জাতীয় ফল
হওয়ায় অতিরিক্ত খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে, যা গর্ভবতীদের জন্য খুবই
অস্বস্তিকর। তাছাড়া বেশি খেলে ডায়রিয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে, যা এই
সময়ে মারাত্মক হতে পারে। তাই পরিমাণে সীমিত রেখে খাওয়াই শ্রেয়।
আমড়ার মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক এসিড কখনো কখনো হজমে সহায়তা করলেও অতিরিক্ত
খাওয়ায় তা উল্টো প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে যারা গ্যাস্ট্রিক বা আলসারের
সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য অতিরিক্ত টক ফল খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় হরমোনের কারণে হজম শক্তিতে পরিবর্তন আসে, ফলে সহজে গ্যাস, বদহজম
কিংবা বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা দেখা দেয়। এই ধরনের সমস্যা রোধে আমড়ার পরিমাণ
নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। গর্ভবতী মায়েদের শরীর প্রতিনিয়ত নতুন চাহিদা তৈরি করে,
তাই আমড়া খাওয়া উচিত নির্দিষ্ট সময়ে এবং পরিমাণে। অনেকেই ভাবেন যত বেশি খাওয়া
যায়, তত ভালো, কিন্তু এই ধারনা একেবারেই ভুল। দৈনিক ৫০-১০০ গ্রাম পরিমাণ আমড়া
বা ১ থেকে দেড়টি মাঝারি আকারের ফল খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি পূরণ হয়ে
যায়। এক্ষেত্রে নিয়ম মেনে খাওয়াই আসল বুদ্ধিমত্তা।
গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার সঠিক নিয়ম
আমরা উপরে জেনে নিলাম, গর্ভাবস্থায় কতটুকু আমড়া খাওয়া উচিত। এখন আমরা আলোচনা করবো
গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। গর্ভাবস্থায় খাদ্য গ্রহণে সঠিক
নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমড়া খাওয়ার সময় শুধু পরিমাণ নয়, কখন
এবং কীভাবে খাওয়া হচ্ছে সেটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় দেখা যায়, সঠিক
খাবারও যদি ভুলভাবে খাওয়া হয়, তবে তার উপকারিতার বদলে অপকারিতা বেশি হয়।
আমড়ার মতো টক ফল খাওয়ার সময় তা যেন খালি পেটে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে
হবে। খালি পেটে আমড়া খেলে অ্যাসিডিটির সম্ভাবনা বেড়ে যায়, যা পেটে জ্বালাপোড়া
ও গ্যাস্ট্রিক সৃষ্টি করতে পারে। তাই আমড়া খাওয়ার সেরা সময় হলো দুপুরের
খাবারের পর অথবা বিকেলের হালকা নাশতার সময়। এই সময় শরীর খানিকটা বিশ্রামে থাকে,
ফলে পুষ্টিগুণ সহজে শরীরে শোষিত হয় এবং হজমেও সুবিধা হয়।
আমড়া খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া উচিত। বিশেষ করে যেসব আমড়া
বাজার থেকে কেনা হয়, সেগুলোতে অনেক সময় রাসায়নিক পদার্থ বা ধুলাবালি থাকতে
পারে। এগুলো গর্ভাবস্থায় মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই প্রতিবার খাওয়ার
আগে পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া এবং সম্ভব হলে লবণ পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে
রাখা ভালো। এতে জীবাণু ধ্বংস হয় এবং খাওয়ার জন্য নিরাপদ হয়। আমড়া খেতে পারেন
কাঁচা, কেটে লবণ মিশিয়ে বা সামান্য মিষ্টি দিয়ে টক-মিষ্টি করে। তবে ঝাল বা
চাটনি জাতীয় কিছু মেশানো একদমই অনুচিত, কারণ এতে হজমের সমস্যা তৈরি হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় শরীর এমনিতেই সংবেদনশীল, তাই সহজভাবে প্রাকৃতিক স্বাদেই খাওয়াই
ভালো।
গর্ভাবস্থায় আমড়া কতটা স্বাস্থ্য সহায়ক?
গর্ভাবস্থায় প্রতিটি খাবারের পুষ্টিগুণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি সেটি শরীর কতটা
সহায়কভাবে গ্রহণ করছে সেটিও চিন্তা করা দরকার। আমড়া এমন একটি ফল যা
প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন সি, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মিনারেলে ভরপুর এবং এটি
আমরা উপরে বেশ কয়েকবার উল্লেখ করেছি। এই উপাদানগুলো একজন গর্ভবতী নারীর শরীরকে
ভিতর থেকে শক্তি জোগাতে সাহায্য করে।
আমড়া শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এই সময় নারী শরীর ভাইরাস
ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে সহজে আক্রান্ত হয়, তাই নিয়মিত আমড়া খেলে শরীরের
ইমিউন সিস্টেম মজবুত হয়।
-
আমড়ায় থাকা ডায়েটারি ফাইবার পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, যা
গর্ভাবস্থার অন্যতম সাধারণ সমস্যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকর। ফলে মায়ের
হজম ভালো থাকে এবং শিশুর বিকাশে বাধা পড়ে না।
-
আমড়ার আরও একটি বড় উপকারিতা হলো এটি রক্তে আয়রনের শোষণ ক্ষমতা বাড়ায়।
গর্ভাবস্থায় আয়রনের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়, কারণ এই সময় শরীরে অতিরিক্ত
রক্ত উৎপাদনের প্রয়োজন পড়ে। যদি আয়রনের শোষণ ঠিকমতো না হয়, তবে গর্ভবতী মা
রক্তস্বল্পতায় ভুগতে পারেন, যা শিশুর বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
আমড়া এই ঘাটতি পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
-
তাছাড়া, আমড়ায় থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের কোষকে ক্ষতি থেকে
রক্ষা করে। এটি গর্ভকালীন মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে, কারণ
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে বিষাক্ত উপাদান কমিয়ে দেয়।
-
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, আমড়া খেলে শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় থাকে
এবং মুখের রুচি ফেরে, যা গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে বমিভাব দূর করতে কার্যকর।
-
গর্ভাবস্থায় অনেক নারী হরমোনজনিত কারণে ঘুমের সমস্যা, মেজাজ খারাপ, মাথা
ব্যথা বা অবসাদে ভোগেন। আমড়া খেলে এই ধরনের মানসিক অস্থিরতা কিছুটা কমে
যায়। এর মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান নার্ভকে শান্ত করে এবং মেজাজ ঠিক
রাখে।
-
এছাড়াও আমড়া শরীরে হাইড্রেশন বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা গরমের সময় বা
গর্ভকালীন অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার সময় দারুণ উপকারি। মায়ের শরীর যদি ভেতর থেকে
ঠান্ডা থাকে, তাহলে শিশুর বিকাশও সঠিকভাবে হয়।
তাই বলা যায়, আমড়া একটি সহজলভ্য কিন্তু অত্যন্ত স্বাস্থ্য উপকারি ফল। নিয়ম
মেনে খেলে এটি গর্ভকালীন জটিলতা কমায়, শরীর সুস্থ রাখে এবং মানসিক শান্তিও
নিশ্চিত করে। তাই গর্ভাবস্থায় আমড়া কেবল একটি ফল নয়, বরং স্বাস্থ্যরক্ষার একটি
প্রাকৃতিক উপায়।
গর্ভাবস্থায় আমড়া খেলে গর্ভস্থ শিশুর শরীরের বিকাশে কিরুপ পরিবর্তন
ঘটে?
গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মায়ের চাওয়া থাকে যেন তার গর্ভের সন্তান সুস্থভাবে গড়ে ওঠে
এবং ভবিষ্যতে সে একজন সুস্থ-সবল মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠতে পারে। এই সময়ে মায়ের
খাদ্যাভ্যাসই মূলত শিশুর শরীরের কাঠামো তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। আমড়া এমন একটি
ফল যা গর্ভবতী নারীদের জন্য হতে পারে একেবারে প্রাকৃতিক পুষ্টির খনি। আমড়ায় থাকা
ভিটামিন সি, আয়রন, ফসফরাস, এবং নানা প্রকার প্রাকৃতিক খনিজ উপাদান গর্ভস্থ শিশুর
গঠন ও বিকাশে সহায়তা করে। যখন একজন গর্ভবতী মা নিয়মিত পরিমাণমতো আমড়া খায়, তখন তা
তার রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ফলে শিশুর শরীরে
পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায়, যা তার মস্তিষ্ক এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঠিক গঠনে
সহায়তা করে।
আমড়ায় থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস গর্ভস্থ শিশুর হাড় এবং দাঁতের গঠন শক্তিশালী করে।
গর্ভকালীন সময়ে অনেক সময় দেখা যায় শিশুদের হাড়ের গঠন দুর্বল হয়, যা জন্মের পর পরই
প্রকাশ পায়। এই ধরণের সমস্যা প্রতিরোধে আমড়া দারুণ কাজ করে। এছাড়া আমড়ায় থাকা
ভিটামিন 'এ' চোখের গঠন ভালো রাখতে সহায়তা করে, ফলে গর্ভকালেই শিশুর চোখের
দৃষ্টিশক্তি উন্নত হতে শুরু করে। এই কারণে অনেক মা চিকিৎসকের পরামর্শে স্বাভাবিক
ফলমূলের পাশাপাশি আমড়াও খাদ্যতালিকায় রাখেন। আবার গর্ভবতী মায়ের শরীরে বিভিন্ন
রকম অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। আমড়ায় থাকা প্রাকৃতিক
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানগুলো শিশুর কোষের সঠিক বিকাশ নিশ্চিত করে। বিশেষ করে
স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে এসব অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের প্রভাব অনেক বেশি। চিকিৎসকরা
বলেন, মায়ের খাদ্য যদি প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর হয়, তাহলে শিশুও তার প্রভাব পেয়ে
গর্ভাবস্থায় সুস্থভাবে বেড়ে ওঠে। আমড়া সেই দিক দিয়ে এক অনন্য ফল হিসেবে গণ্য করা
হয়।
সর্বশেষ বলা যায়, গর্ভাবস্থায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় স্বল্প পরিমাণ আমড়া রাখা
একটি জ্ঞানগর্ভ সিদ্ধান্ত হতে পারে। তবে সবকিছুরই যেমন সঠিক মাত্রা থাকা দরকার,
আমড়ার ক্ষেত্রেও তেমনি। মাত্রাতিরিক্ত খেলে তা মা কিংবা শিশুর জন্য নেতিবাচক
প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ঘরে তৈরি সাধারণ আমড়া, ভালোভাবে ধুয়ে এবং সঠিক নিয়মে খেলে
এটি নিঃসন্দেহে গর্ভস্থ শিশুর দেহের গঠনে সহায়ক এক ফল হিসেবে কাজ করে।
গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার অপকারিতা
আমরা তো উপরে গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে এসেছি। তবে আমরা
কি জানি, গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার অপকারিতা কি? তবে চলুন জেনে নেই বিষয়টা
সম্পর্কে।
গর্ভাবস্থায় ফল খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারি, তবে কোনো কোনো ফল সঠিকভাবে না
খাওয়া হলে তা বিপরীত প্রভাব ফেলতে পারে। আমড়া এমন এক ধরনের ফল, যার অনেক উপকার
আছে এবং আমরা সেই উপকারগুলো সম্পর্কে উপরে জেনেছি, তবে অতিরিক্ত বা ভুলভাবে খেলে
হতে পারে নানা ক্ষতি। গর্ভবতী নারীর শরীরে তখন হরমোনের পরিবর্তন, খাদ্য পরিপাকের
জটিলতা এবং অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা দেখা দেয়। এ সময় যদি নিয়ন্ত্রণহীনভাবে আমড়া
খাওয়া হয়, তাহলে তা মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। গর্ভকালীন সময়ে মায়ের
প্রতিটি খাবারের প্রতিক্রিয়া শিশুর ওপরও পড়ে, তাই এই সময় সতর্ক না থাকলে ভবিষ্যতে
আফসোস হতে পারে। নিচে আমড়ার উল্লেখযোগ্য অপকারিতা নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা
হলো:
-
হজমে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে: গর্ভবতী মায়ের পেট অনেক সময়ই সংবেদনশীল
থাকে। আমড়ায় প্রাকৃতিক অ্যাসিড এবং টকজাতীয় উপাদান বেশি থাকার কারণে বেশি
খেলে এটি পেটে গ্যাস, অম্বল এবং পেট ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। অনেক সময় দেখা
যায়, খালি পেটে আমড়া খেলে হজমের অসুবিধা দেখা দেয় এবং বমিভাবও তৈরি হয়।
যেহেতু গর্ভবতী নারীদের মধ্যে এমনিতেই হজম সমস্যা দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে আমড়া
তা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
-
দাঁতের এনামেল ক্ষয় হতে পারে: আমড়া খুবই টক স্বাদের একটি ফল। এতে থাকা
অ্যাসিডিক উপাদান দাঁতের ওপরে থাকা প্রাকৃতিক এনামেল নষ্ট করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় দাঁত ও মাড়ির সমস্যা খুব সাধারণ একটি বিষয়, আর এই সময় অতিরিক্ত
টক কিছু খেলে দাঁতে ব্যথা, দাঁতের ক্ষয় ও সংবেদনশীলতা বেড়ে যেতে পারে। অনেক
সময় ঠান্ডা কিছু খেলেও ব্যথা অনুভূত হয়। এটি মায়ের কষ্টের পাশাপাশি তার
খাবারের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দেয়, যা গর্ভস্থ শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
-
ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হওয়ার ঝুঁকি: যদি খুব পাকা বা অল্প পাকা
আমড়া খাওয়া হয়, তাহলে কিছু মানুষের শরীরে তা সহজে হজম না হওয়ায় ডায়রিয়া হতে
পারে। গর্ভাবস্থায় ডায়রিয়া হলে তা শরীরকে দুর্বল করে তোলে এবং পেটের পেশিতে
চাপ পড়ে। এ ধরনের সমস্যা গর্ভবতী নারীর জন্য মোটেও নিরাপদ নয়। বিশেষ করে
গ্রীষ্মকালে বা বৃষ্টির সময় পঁচা আমড়া খাওয়া হলে এর সম্ভাবনা আরও বাড়ে।
-
গর্ভে গ্যাস জমা হয়ে পেট ব্যথা হতে পারে: আমড়ায় রয়েছে প্রচুর আঁশ এবং
টকজাতীয় উপাদান। বেশি আমড়া খেলে অনেক সময় অন্ত্রের ভেতর গ্যাস জমে গিয়ে পেট
ফুলে যায় এবং ব্যথা হয়। গর্ভাবস্থায় এমন পেট ব্যথা অনেক সময় ভয়ের কারণ হয়ে
দাঁড়ায়, কারণ তা প্রসব বেদনার মতো অনুভব হতে পারে। যদিও তা বিপজ্জনক নয়
সবসময়, তবে অস্বস্তি তৈরি করে ও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
-
অতিরিক্ত খেলে রক্তচাপ বাড়তে পারে: যদিও সাধারণভাবে আমড়া রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, তবে গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে তার
শরীরে সোডিয়াম ও অন্যান্য লবণের ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে। এতে রক্তচাপ বেড়ে
যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। উচ্চ রক্তচাপ গর্ভাবস্থায় বিপদজনক অবস্থার দিকে
নিয়ে যেতে পারে, এমনকি প্রসবকালীন ঝুঁকিও বাড়াতে পারে।
-
অ্যালার্জি বা ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে: কিছু গর্ভবতী নারীর শরীর
আমড়ার প্রতি সংবেদনশীল হতে পারে। ফলে তারা এটি খাওয়ার পর ত্বকে ফুসকুড়ি,
চুলকানি কিংবা অ্যালার্জির মতো প্রতিক্রিয়া পেতে পারেন। এটি শরীরের বাহ্যিক
প্রতিক্রিয়া হলেও শরীরের ভেতরের অসহিষ্ণুতা বাড়িয়ে তোলে এবং তা গর্ভকালীন
স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত করতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া হঠাৎ বেশি
পরিমাণ আমড়া খাওয়া এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় আমড়াকে আর কিভাবে খাওয়া যায়?
আমরা উপরে বিস্তারভাবে জেনে গেছি গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে এবং একই সাথে আমরা এটি খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ সম্পর্কেও জেনেছি।
চলুন এবার জেনে নেই আমড়াকে আমরা আর কিভাবে গর্ভাবস্থায় আমড়াকে খেতে পারি।
গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার সময় সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ,
এই সময় মায়ের শরীর অনেক বেশি সংবেদনশীল থাকে এবং যে কোনো খাবারই সন্তানের ওপর
সরাসরি প্রভাব ফেলে। আমড়া যদি সঠিকভাবে খাওয়া যায়, তাহলে তা মায়ের শরীরে শক্তি
জোগাতে এবং গর্ভস্থ শিশুর বিকাশে সহায়তা করতে পারে। নিচে গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার
কয়েকটি নিরাপদ এবং কার্যকর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আমরা আলোচনা করেছি।
-
সেদ্ধ করে আমড়া খাওয়া: অনেক সময় কাঁচা আমড়া সরাসরি খেলে হজমে সমস্যা
হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমড়া হালকা সেদ্ধ করে খেলে তা সহজে হজম হয় এবং পেটেও
ব্যথা হয় না। এতে ফলের পুষ্টিগুণ কিছুটা কমলেও গর্ভবতী নারীর জন্য এটি নিরাপদ
এবং উপকারি হয়ে ওঠে। সেদ্ধ করার সময় লবণ না দিয়ে শুধু পানিতে ফুটিয়ে খেলে তা
বেশি ভালো।
-
লবণ ছাড়া আমড়া খাওয়া উচিত: অনেকেই আমড়ার সঙ্গে লবণ বা লবণ-লঙ্কা দিয়ে
খেয়ে থাকেন। কিন্তু গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত লবণ খেলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে,
যা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমড়া খাওয়ার সময় এতে লবণ না মেশানোই শ্রেয়। চাইলে একটু
চিনি বা মধু দিয়ে খাওয়া যেতে পারে, তবে তাও পরিমাণমতো।
-
আচার বা ভর্তা বানিয়ে খাওয়ার সময় সতর্কতা রাখা: অনেকে আমড়া দিয়ে আচার
বানিয়ে খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু আচার তৈরি করতে ব্যবহৃত মসলা, তেল এবং
ভিনেগার গর্ভাবস্থায় অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। তাই যদি আমড়ার আচার খেতে ইচ্ছা
হয়, তবে তা ঘরে তৈরি, হালকা মসলা ও তেলের কম ব্যবহারে বানানো উচিত এবং খুব কম
পরিমাণে খাওয়া উচিত।
-
দুধের সঙ্গে খাওয়া এড়িয়ে চলা: আমড়ায় প্রচুর পরিমাণে অ্যাসিড থাকে এবং
দুধে ক্যালসিয়াম বেশি থাকে। এই দুটি একসাথে খাওয়া হলে অনেক সময় পাকস্থলীতে
অ্যাসিডিটি তৈরি হয়। তাই আমড়া খাওয়ার পর অন্তত এক ঘণ্টা দুধ খাওয়া উচিত নয়।
একইভাবে দুধ খাওয়ার পরে এক ঘণ্টার মধ্যে আমড়া খাওয়া ঠিক নয়।
-
খালি পেটে আমড়া না খাওয়া ভালো: সকালে খালি পেটে বা দীর্ঘ সময় না
খাওয়ার পর আমড়া খেলে পেটে গ্যাস হতে পারে বা অম্বল হতে পারে। তাই খাওয়ার এক
থেকে দুই ঘণ্টা পরে আমড়া খাওয়া ভালো। এতে হজম ভালো হয় এবং পেটে ব্যথার
আশঙ্কাও কমে যায়।
-
হালকা লবণ ও চিনি দিয়ে শরবত বানিয়ে খাওয়া: অনেক গর্ভবতী নারী টক
স্বাদের জন্য আমড়া খেতে পারেন না। তাদের জন্য আমড়ার শরবত বানিয়ে খাওয়া একটি
সহজ উপায় হতে পারে। সামান্য পরিমাণে চিনি ও এক চিমটি নুন দিয়ে আমড়া ব্লেন্ড
করে পান করলে তা গর্ভবতী মায়ের শরীরে ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। তবে
অতিরিক্ত চিনি ব্যবহার করা যাবে না।
-
পাকা ও ভালো আমড়া বেছে নেওয়া জরুরি: আমড়া কেনার সময় সবসময় সতর্ক থাকতে
হবে যেন ফলটি পচা বা কাঁচা বেশি না হয়। মাঝারি পাকা, সতেজ এবং দাগবিহীন আমড়া
খাওয়াই স্বাস্থ্যকর। পুরনো বা রাসায়নিক দিয়ে পাকানো আমড়া খেলে তা মা ও শিশুর
শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত
গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ এর সঠিকভাবে খাওয়ার নিয়ম থেকে
শুরু করে যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে আমরা উপরে জেনে এসেছি তা একজন গর্ভবতী নারীর জন্য
খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এখন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জানবো এবং সেটি
হচ্ছে গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত?
গর্ভাবস্থায় মায়ের প্রতিটি খাবারই সন্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় ফল
খাওয়া শুধু পুষ্টি জোগায় না, বরং ভ্রূণের সঠিক গঠনে সহায়তা করে। তবে এমন কিছু
ফল আছে যেগুলো গর্ভবতী নারীর জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এই ফলগুলো ভিটামিন, মিনারেল,
আঁশ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। ফলে হজমের সমস্যা কমে, রক্তশূন্যতা দূর হয়,
ক্লান্তি কমে এবং শিশু সুস্থভাবে বেড়ে ওঠে। নিচে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ফল ও
তাদের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা আলোচনা করেছি চলুন জেনে আসি তবে।
-
আপেল: আপেল একটি নিরাপদ ও উপকারি ফল। এতে আছে ভিটামিন সি, ফাইবার এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা গর্ভকালীন সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হজম
ভালো রাখে। এছাড়াও এটি গর্ভের শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে সহায়তা করে।
-
কলা: কলা শক্তি জোগায়, কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং বমিভাব হ্রাস করে। গর্ভবতী
নারীর জন্য কলা অত্যন্ত উপযোগী একটি ফল কারণ এতে আছে প্রচুর পরিমাণে
পটাশিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
-
পেঁপে (পাকা): পাকা পেঁপে ভিটামিন এ ও সি-তে সমৃদ্ধ। এটি হজমে সাহায্য করে
এবং দেহে রক্ত তৈরি করে। তবে কাঁচা পেঁপে গর্ভাবস্থায় একদম খাওয়া উচিত নয়,
কারণ তাতে গর্ভপাতের আশঙ্কা থাকে।
-
কমলা ও মাল্টা: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফল দুটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
এবং আয়রনের শোষণে সহায়তা করে। এছাড়া এতে পানি ও প্রাকৃতিক চিনি থাকায়
দেহে জলীয় ভারসাম্য রক্ষা হয়।
-
বেদানা: বেদানায় রয়েছে ফোলেট ও আয়রন, যা গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতা দূর
করতে সাহায্য করে। এটি হজমেও সহায়তা করে এবং মায়ের শরীরে শক্তি বাড়ায়।
-
কাঁঠাল (মাঝারি পরিমাণে): কাঁঠাল শক্তির উৎস এবং এতে থাকে ভিটামিন এ ও
ফাইবার। তবে গ্যাসের সমস্যা থাকলে বেশি না খাওয়াই ভালো। মাঝারি পরিমাণে খেলে
এটি শরীর ঠান্ডা রাখে এবং ক্ষুধা বাড়ায়।
-
জাম: জামে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি থাকে। এটি হজম ভালো রাখে
এবং রক্তের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস থাকলে
জাম বেশ উপকারি।
-
লিচু (পরিমাণ মতো): লিচুতে রয়েছে ভিটামিন সি ও প্রাকৃতিক চিনিজাত উপাদান, যা
ক্লান্তি দূর করে এবং শরীরে সতেজতা আনে। তবে অতিরিক্ত খেলে রক্তচাপ বাড়তে
পারে, তাই পরিমাণ বুঝে খেতে হবে।
-
কিউই: কিউইতে আছে ফোলেট, ভিটামিন সি ও ফাইবার। এটি শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে
সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে।
-
আঙুর (পরিমিত পরিমাণে): আঙুরে ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে যা রক্ত পরিষ্কার করে এবং
গর্ভকালীন বিষক্রিয়া কমায়। তবে খুব বেশি খেলে শরীরে গরম লাগতে পারে, তাই
সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না
আমরা উপরে জেনেছি গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে, তবে আমরা কি জানি
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না? চলুন তবে জেনে নেই বিষয়টি সম্পর্কে।
গর্ভাবস্থায় সব ধরনের ফল খাওয়া নিরাপদ নয়। কিছু ফল আছে যেগুলোর মধ্যে এমন
উপাদান থাকে, যা গর্ভস্থ শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে
পারে। এছাড়াও কিছু ফলে অতিরিক্ত তাপ সৃষ্টি করে শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে,
যা গর্ভবতী মায়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এই সময় কিছু ফল এড়িয়ে চলা অত্যন্ত জরুরি।
নিচে এমন ৭টি ফল ও তাদের খারাপ প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
-
কাঁচা পেঁপে: কাঁচা পেঁপেতে আছে প্যাপেইন নামক একটি উপাদান, যা জরায়ুর
সংকোচন ঘটাতে পারে এবং গর্ভপাতের আশঙ্কা বাড়ায়। এছাড়াও এই উপাদানটি ভ্রূণের
জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় কাঁচা পেঁপে একেবারেই খাওয়া উচিত
নয়। পাকা পেঁপে নিরাপদ হলেও, তা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ভালো।
-
আনারস (প্রথম তিন মাসে): আনারসে ব্রোমেলাইন নামক একটি এনজাইম থাকে, যা
জরায়ুর প্রাচীর নরম করতে পারে এবং গর্ভপাতের সম্ভাবনা তৈরি করে। বিশেষত
গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে এটি অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এই সময় আনারস
খাওয়া থেকে বিরত থাকা ভালো।
-
লিচু (অতিরিক্ত পরিমাণে): লিচুতে প্রাকৃতিক চিনি ও হিটিং প্রপার্টি থাকায়
এটি শরীরে তাপ সৃষ্টি করতে পারে। বেশি পরিমাণে খাওয়া হলে ডায়াবেটিস,
পেটব্যথা বা রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। তাই গর্ভবতী নারীদের জন্য লিচু অল্প
পরিমাণে খাওয়াই নিরাপদ।
-
তেঁতুল (অতিরিক্ত): তেঁতুল গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত খেলে শরীরে অ্যাসিডের
পরিমাণ বেড়ে যায় এবং হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে ভ্রূণের বৃদ্ধিতে
সমস্যা হতে পারে। যদিও অল্প পরিমাণে খাওয়া ক্ষতিকর নয়, তবে অতিরিক্ত খাওয়া
একদম এড়িয়ে চলা উচিত।
-
আঙ্গুর (বেশি পরিমাণে): আঙ্গুরে থাকা তাপ উৎপাদনকারী উপাদান শরীর গরম করে
দিতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় অস্বস্তিকর হতে পারে। তাছাড়া এতে থাকা
রেসভেরাট্রল নামক উপাদান অতিরিক্ত খেলে হরমোন ভারসাম্যে সমস্যা করতে পারে।
তাই পরিমিত পরিমাণে খাওয়াই ভালো।
-
ডাব পাকা হলে (অতিরিক্ত): ডাবের পানি গর্ভাবস্থায় বেশ উপকারি হলেও, অতিরিক্ত
পাকা ডাব বা গুঁড়ো নারকেল খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। এতে ফ্যাট বেশি থাকায়
তা হজমে সমস্যা করে এবং ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
-
খেজুর (প্রথম দিকে অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো): খেজুরে উচ্চ ক্যালোরি ও তাপ
উৎপাদনকারী উপাদান থাকায় গর্ভাবস্থার শুরুতে এটি জরায়ুর সংকোচন ঘটাতে পারে।
তবে শেষ তিন মাসে এটি খাওয়া উপকারি হতে পারে। তাই সময় অনুযায়ী খেজুর খাওয়ার
নিয়ম মানা উচিত।
শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আমরা আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা
ও অপকারিতা, কতটুকু আমড়া খাওয়া উচিত, আমড়া খাওয়ার সঠিক নিয়ম, আমড়া কতটা স্বাস্থ্য
সহায়ক? আমড়া খেলে গর্ভস্থ শিশুর শরীরের বিকাশে কিরুপ পরিবর্তন ঘটে? আমড়াকে আর
কিভাবে খাওয়া যায়? এছাড়া গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত আর কি কি ফল খাওয়া
উচিত নয় এসকল বিষয় সম্পর্কে আপনাদের ধারাবাহিকভাবে জানিয়েছি এই আর্টিকেলের
মাধ্যমে। আমরা আশা করছি যে, এই আর্টিকেলটি আপনার নিকট খুবই পছন্দনীয় ও আপনার
জীবনে অনেক উপকার বয়ে আনবে।
প্রিয় পাঠক আপনার নিকট অনুরোধ রইবে, গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা’কে সবাই
যেন জানতে পারে আপনার প্রিয়জন থেকে শুরু করে আপনার কাছের মানুষদের নিকট শেয়ার করে
দিন এবং তাদেরও এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জানার সুযোগ করে দিন। আর হ্যাঁ প্রিয়
পাঠক, আমাদের এই ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত নতুন তথ্যপূর্ণ আর্টিকেল পাবলিশ করা হয় তাই
আমাদের এই ওয়েবসাইট আপনি নিয়মতি ভিজিট করুন এবং নতুন তথ্যগুলো সম্পর্কে সবার আগে
জেনে রাখুন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত থাকে তবে অবশ্যই
নির্দ্বিধায় কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। নিজের শরীরের যত্ন নিন এবং
সুস্থ-সুন্দর জীবনযাপন করুন।
BLOGGER MRH-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url