সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত

ওয়ালটন ফ্রিজের তাপমাত্রা কত রাখা উচিত

আপনার বাসায় একটি সিঙ্গার ফ্রিজ রয়েছে। কিন্তু আপনি জানেন কি সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত? যদি জেনে না থাকেন তবে আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন। কেননা আজকে আমরা এই আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে জানবো, সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত তা সম্পর্কে।

সিঙ্গার-ফ্রিজের-পাওয়ার-কত-রাখা-উচিত

ঘরে একটি ফ্রিজ মানেই খাবার টাটকা, ঠান্ডা পানীয়, আর স্বস্তি। তবে ফ্রিজে থাকা খাবার কি ঠিকঠাক ঠান্ডা হচ্ছে? কিংবা বিদ্যুৎ বিল বেশি আসছে না তো? 

পোস্ট সূচিপত্র:  সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত?

সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত?

প্রিয় পাঠকবৃন্দ আমরা সর্বপ্রথমে আমাদের মূল পয়েন্টটি নিয়ে আলোচনা করবো। চলুন তবে বিষয়টি সম্পর্কে বিশাদভাবে জেনে নেওয়া যাক। সিঙ্গার ফ্রিজ একটি বিশ্বস্ত ও জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, যা বাংলাদেশের বহু পরিবারে প্রতিদিনের খাবার সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার হয়। ফ্রিজের পাওয়ার বা কুলিং সেটিংস সঠিকভাবে নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সরাসরি খাবারের মান, বিদ্যুৎ খরচ এবং ফ্রিজের স্থায়িত্বের ওপর প্রভাব ফেলে।

একটি সাধারণ সিঙ্গার ফ্রিজে পাওয়ার কন্ট্রোল ডায়াল থাকে, যেটি সাধারণত ১ থেকে ৭ পর্যন্ত কোনো একক স্কেলে থাকে। এখানে ১ হচ্ছে সবচেয়ে কম ঠান্ডা এবং ৭ হচ্ছে সর্বোচ্চ ঠান্ডা। আপনি যদি প্রশ্ন করেন, সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত? তবে আমরা বলি যে- বাংলাদেশের গরম আবহাওয়া বিবেচনায় সাধারণত ৪ থেকে ৫ এর মধ্যে পাওয়ার সেট করা সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত। তবে শুধুমাত্র আবহাওয়া নয়, বরং আপনার ব্যবহারের পরিমাণ, ফ্রিজে সংরক্ষিত খাবারের ধরন এবং কতবার ফ্রিজ খোলা হচ্ছে, এসব বিষয়ের উপরেও পাওয়ার সেটিং নির্ভর করে। প্রতিদিন যদি আপনি ফ্রিজটি বারবার খোলেন এবং প্রচুর খাবার রাখেন, তাহলে পাওয়ার কিছুটা বাড়িয়ে ৫ বা ৬ করা যেতে পারে।

অন্যদিকে, যদি আপনি কম খাবার রাখেন বা রাতে ফ্রিজের দরজা কম খোলা হয়, তাহলে সেটিং ৩-৪ রাখলেই যথেষ্ট। এইভাবে পাওয়ার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করলে খাবার ভালো থাকবে এবং বিদ্যুৎও কম খরচ হবে। সবচেয়ে বড় কথা, ফ্রিজের ভিতরের তাপমাত্রা যদি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না হয়, তাহলে খাবার নষ্ট হয়ে যেতে পারে, দুর্গন্ধ সৃষ্টি হতে পারে এবং অতিরিক্ত বরফ জমে গিয়ে ফ্রিজের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। তাই পাওয়ার লেভেল বুঝেশুনে ঠিক করা অত্যন্ত জরুরি।

সিঙ্গার ফ্রিজের বিভিন্ন মডেলের জন্য পাওয়ার সেটিংস কি আলাদা?

প্রিয় পাঠকবৃন্দ আমরা উপর থেকে জেনে আসলাম, সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত? এখন আমরা আলোচনা করবো এবং জানবো সিঙ্গার ফ্রিজের বিভিন্ন মডেলের জন্য পাওয়ার সেটিংস কি আলাদা? সে সম্পর্কে।

সিঙ্গার ফ্রিজের বাজারে বিভিন্ন মডেল পাওয়া যায়, যেমন সিঙ্গার সিঙ্গেল ডোর, ডাবল ডোর, ডিপ ফ্রিজ ও ইনভার্টার ফ্রিজ। প্রতিটি মডেলের জন্য পাওয়ার সেটিং কিছুটা পার্থক্য থাকে, কারণ প্রতিটি মডেলের কুলিং সিস্টেম এবং গঠন ভিন্ন। সিঙ্গার ফ্রিজের সিঙ্গেল ডোর সাধারণত ম্যানুয়াল পাওয়ার কন্ট্রোল থাকে। এর জন্য ৪ থেকে ৫ পাওয়ার সেটিং মাঝারি আবহাওয়ায় যথেষ্ট। গরমকালে বা বেশি খাবার সংরক্ষণের সময় সেটিং ৬-এ নেওয়া যেতে পারে। এই মডেলে দ্রুত বরফ জমার প্রবণতা থাকে, তাই মাঝে মাঝে পাওয়ার কমিয়ে নেওয়া উচিত।

ডাবল ডোর ফ্রিজে সাধারণত আলাদা আলাদা কুলিং জোন থাকে। এতে ফ্রিজ ও ফ্রিজারের জন্য আলাদা সেটিং প্রয়োজন হতে পারে। এই ধরনের ফ্রিজে ডিজিটাল কন্ট্রোল প্যানেলও থাকে, যেখানে আপনি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা নির্ধারণ করতে পারেন। ডিপ ফ্রিজের ক্ষেত্রে মূলত বেশি ঠান্ডা প্রয়োজন হয়। তাই এতে পাওয়ার ৫ বা ৬-এ রাখা সাধারণত ভালো ফল দেয়। তবে দীর্ঘ সময় ফ্রিজ না খোলা হলে ৪-এ রাখা যথেষ্ট। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় এবং অতিরিক্ত বরফ জমে না।

ইনভার্টার ফ্রিজে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তবুও শুরুতে পাওয়ার লেভেল ৫-এ রাখা ভালো এবং পর্যবেক্ষণ করে সেটিং পরিবর্তন করা উচিত। আপনার জন্য যেটি সুবিধা হবে সেটি হচ্ছে- প্রতিটি মডেলের ম্যানুয়াল গাইড পড়ে পাওয়ার সেটিং জেনে নেওয়া সর্বোত্তম পদ্ধতি।

খাবারের ধরণ অনুযায়ী ফ্রিজ সেটিং কত রাখবো?

খাবারের ধরণ অনুযায়ী ফ্রিজের তাপমাত্রা নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সব ধরণের খাবার এক ধরনের তাপমাত্রায় ভালো থাকে না। তাই বুঝে শুনে পাওয়ার লেভেল ঠিক করা প্রয়োজন। নিচে খাবারের প্রকারভেদে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করা হয়েছে, চলুন জেনে নেওয়া যাক।

  • প্রথমেই জেনে নিন- যদি আপনি একসাথে বিভিন্ন ধরনের খাবার সংরক্ষণ করেন, তাহলে একটি মাঝারি পাওয়ার সেটিং (৪ বা ৫) ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ। অতিরিক্ত ঠান্ডায় কিছু খাবার জমে যেতে পারে, আবার কম ঠান্ডায় সহজে নষ্টও হতে পারে।
  • দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার: এই জাতীয় খাবার ৩-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভালো থাকে। পাওয়ার লেভেল ৫-এ রাখা উত্তম।
  • মাছ, মাংস সংরক্ষণ: এই ধরনের খাবারকে দীর্ঘ সময় ভালো রাখতে চাইলে পাওয়ার ৬-এ রাখা ভালো। তবে বরফ জমে গেলে মাঝে মাঝে ডিফ্রস্ট করতে হবে।
  • ফলমূল ও সবজি: এগুলো সাধারণত ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার আশেপাশে ভালো থাকে। বেশি ঠান্ডা করলে পচে যেতে পারে। তাই পাওয়ার ৪-এ রাখা ভালো।
  • রান্না করা খাবার: ফ্রিজে রাখার জন্য এসব খাবারের জন্যও মাঝারি ঠান্ডা প্রয়োজন হয়। পাওয়ার লেভেল ৪ বা ৫ যথেষ্ট।
  • আইসক্রিম বা হিমজাত খাবার: এগুলোর জন্য ফ্রিজার পার্টে পাওয়ার ৬ বা ৭ প্রয়োজন হতে পারে।
ফ্রিজের তাপমাত্রা বুঝে প্রতি কয়েকদিন পরপর সেটিং চেক করে পরিবর্তন করাই ভালো। এতে খাবার দীর্ঘ সময় ভালো থাকে এবং বিদ্যুৎ খরচও নিয়ন্ত্রিত হয়।

ফ্রিজে আইস তৈরির জন্য সঠিক টেম্পারেচার কত?

আইস বা বরফ তৈরি ফ্রিজ ব্যবহারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। যারা নিয়মিত ঠান্ডা পানি বা আইসক্রিম খেতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য ফ্রিজে দ্রুত বরফ তৈরি হওয়া অত্যন্ত জরুরি। বরফ তৈরির জন্য ফ্রিজের ফ্রিজার পার্টের তাপমাত্রা সাধারণত -১৮ ডিগ্রিসেলসিয়াস থেকে -২০ ডিগ্রিসেলসিয়াস এর মধ্যে রাখা উচিত। এই তাপমাত্রা বজায় রাখতে হলে পাওয়ার লেভেল ৬ বা ৭ এ রাখা ভালো। তবে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি, যেমন: 

  • যদি আপনি ফ্রিজে বরফ তৈরি করতে চান, তাহলে ফ্রিজারটি খালি বা কম ভরাট রাখলে বরফ দ্রুত জমে। কারণ অতিরিক্ত খাবার থাকলে ঠান্ডা ছড়াতে সময় লাগে।
  • বরফ তৈরি করতে হলে ফ্রিজের দরজা বারবার খোলা যাবে না। এতে ভিতরের ঠান্ডা হাওয়া বের হয়ে যায় এবং বরফ জমতে দেরি হয়।
  • নতুন ফ্রিজে বরফ তৈরি হলে প্রথম কয়েকবার বরফ জমতে সময় নিতে পারে। এটি স্বাভাবিক।
  • আপনি যদি একবার বরফ তৈরি করে ফেলেন, এরপর পাওয়ার লেভেল কমিয়ে দিতে পারেন যাতে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়। তবে বরফ গলতে না দেয়ার জন্য নিয়মিত চেক করাও জরুরি।
  • সিঙ্গার ফ্রিজে বরফ তৈরির সময় সাধারণত ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় লাগে, তবে এটি নির্ভর করে ফ্রিজের মডেল ও আবহাওয়ার উপর। গ্রীষ্মকালে একটু বেশি সময় লাগতে পারে।

নতুন কেনা সিঙ্গার ফ্রিজের প্রথমবার পাওয়ার কত রাখা উচিত?

প্রিয় পাঠকবৃন্দ আমরা জেনেছি যে, সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত? চলুন এবার জেনে নেই, নতুন কেনা ফ্রিজ ব্যবহার শুরুর সময় কিছু বিশেষ নিয়ম, যাতে এটি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ভালো পারফরম্যান্স দেয়। প্রথমবার পাওয়ার সেটিং সঠিকভাবে না রাখলে ফ্রিজের মোটর বা কুলিং সিস্টেমে চাপ পড়তে পারে।

নতুন-কেনা-সিঙ্গার-ফ্রিজের-প্রথমবার-পাওয়ার-কত-রাখা-উচিত

প্রথমে ফ্রিজটি বসানোর পর অন্তত ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ফ্রিজ অন না করে রাখুন। এতে গ্যাস স্থিতিশীল হয়। তারপর ফ্রিজ চালু করে পাওয়ার লেভেল ৫-এ রাখুন। একেবারে সর্বোচ্চ লেভেল (৬ বা ৭) ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ নতুন কম্প্রেসরকে হঠাৎ চাপ দিলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। ফ্রিজ চালু করার পর অন্তত ৮ ঘণ্টা কোনো খাবার রাখবেন না। এই সময়ের মধ্যে ফ্রিজ ধীরে ধীরে ঠান্ডা হবে এবং ভিতরের পরিবেশ তৈরি হবে। এরপর একে একে খাবার রাখতে শুরু করুন এবং সেটিং পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে পরে করুন।

অনেকেই প্রথমদিনেই বরফ তৈরি করার চেষ্টা করেন, তবে তা না করাই ভালো। বরং ২৪ ঘণ্টা পরে বরফ তৈরি শুরু করুন। এতে কম্প্রেসর স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, নতুন ফ্রিজে প্রথম ৭ দিন প্রতিদিন ফ্রিজের তাপমাত্রা ও পাওয়ার লেভেল লক্ষ্য করুন। যদি কোন সমস্যা বা অস্বাভাবিক শব্দ শোনা যায়, তবে দ্রুত কোম্পানির হেল্পলাইনে যোগাযোগ করুন। এইসব ছোট ছোট সতর্কতা নতুন ফ্রিজকে দীর্ঘদিন ভালো রাখতে সাহায্য করে।

সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার সেটিংস পরিবর্তন করার সঠিক নিয়ম কী?

সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার সেটিংস সঠিকভাবে পরিবর্তন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ফ্রিজের কার্যক্ষমতা, বিদ্যুৎ খরচ এবং খাবারের সংরক্ষণ- এই তিনটি বিষয়ে সরাসরি প্রভাব ফেলে। অনেকেই জানেন না কোন সময়ে কত পাওয়ার রাখা উচিত এবং কখন সেটিং পরিবর্তন করতে হবে। সঠিকভাবে সেটিং পরিবর্তন না করলে ফ্রিজের কম্প্রেসার বেশি সময় ধরে চলতে পারে কিংবা খুব কম কাজ করে খাবার নষ্ট হতে পারে। তাই বুঝেশুনে পাওয়ার সেটিং পরিবর্তন করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

নিচে সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার সেটিং পরিবর্তনের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম তুলে ধরা হলো:

  • ঋতু অনুযায়ী পাওয়ার সেটিং পরিবর্তন করুন: গরমকালে সাধারণত ৫ বা ৬ নম্বরে রাখতে হয়, আর শীতকালে ১ থেকে ৩ নম্বর পর্যাপ্ত।
  • ফ্রিজ বেশি খালি বা বেশি ভর্তি হলে সেটিং সামান্য পরিবর্তন করুন: বেশি খালি থাকলে কম সেটিং এবং বেশি ভর্তি হলে একটু বেশি সেটিং প্রয়োজন হয়।
  • খাবারের ধরন অনুযায়ী সেটিং ঠিক করুন: মাংস বা মাছের মতো সংবেদনশীল খাদ্য থাকলে একটু বেশি পাওয়ার রাখা উত্তম।
  • বিদ্যুৎ চালনা স্বাভাবিক থাকলে সেটিং কমানো যায়: লো-ভোল্টেজ বা বিদ্যুৎ সমস্যা থাকলে সেটিং বাড়িয়ে রাখতে হতে পারে।
  • একবারে অনেক খাবার রাখার পর সেটিং সাময়িক বাড়িয়ে দিন: নতুন করে গরম খাবার বা অনেক আইটেম রাখলে ফ্রিজকে সাময়িকভাবে বেশি পাওয়ারে রাখতে হবে।

গ্রীষ্মকালে সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত?

গ্রীষ্মকাল মানেই প্রচণ্ড তাপমাত্রা এবং চারপাশে গরম বাতাস। এই সময় ফ্রিজের ওপর বাড়তি চাপ পরে কারণ বাইরের তাপমাত্রা বাড়লে ফ্রিজকে তার অভ্যন্তরীণ ঠান্ডা রাখার জন্য অনেক বেশি কাজ করতে হয়। সিঙ্গার ফ্রিজের মতো ঘরোয়া ফ্রিজগুলোতে গ্রীষ্মকালে পাওয়ার সেটিং সঠিক না হলে ফ্রিজ ভালো ঠান্ডা করতে পারে না, ফলে খাবার দ্রুত নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

গ্রীষ্মকালে সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার সেটিং সাধারণত ৫ থেকে ৬ পর্যন্ত রাখা উচিত। এতে করে ফ্রিজের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা স্থিতিশীল থাকবে এবং খাবার সঠিকভাবে সংরক্ষিত থাকবে। যেহেতু বাইরের গরম বাতাস ফ্রিজের কাজকে ব্যাহত করতে পারে, তাই এই সময় বেশি পাওয়ার সেটিং রাখা নিরাপদ। যাদের ফ্রিজে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে খাবার রাখা হয়, যেমন- ফল, সবজি, রান্না করা খাবার- তাঁদের জন্য ৬ নম্বর সেটিং প্রয়োজন হতে পারে। তবে যদি আপনার ফ্রিজটি আধা খালি থাকে এবং রাত্রিকালীন বিদ্যুৎচাপ ভালো থাকে, তাহলে ৫ নম্বরেও ভালো ঠান্ডা পাওয়া যায়।

গ্রীষ্মকালে একটানা ফ্রিজের দরজা খোলা হলে বা ফ্রিজে গরম খাবার রাখা হলে সেটিং কিছুটা বাড়িয়ে নেওয়া উচিত। কারণ এসব কাজের ফলে ফ্রিজের ভেতরের ঠান্ডা দ্রুত কমে যায় এবং পুনরায় ঠান্ডা হতে কিছুটা সময় লাগে। যদি আপনার এলাকার বিদ্যুৎচাপ কম থাকে বা ফ্রিজের পার্শ্ববর্তী স্থানে তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি হয়, তখন পাওয়ার সেটিং ৬ বা ৭ পর্যন্ত রাখা যেতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, অত্যধিক পাওয়ার সেটিং দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ খরচ বাড়ে। তাই সমন্বয় করে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।

শীতকালে সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত?

আমরা জেনে আসলাম, গ্রীষ্মকালে সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত? এবার আমরা জানবো, শীতকালে সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত? তা সম্পর্কে সম্পর্কে। চলুন তবে বিষয়টি সম্পর্কে জেনে আসা যাক।

শীতকালে তাপমাত্রা কমে যায়, ফলে ফ্রিজের ওপর তেমন চাপ থাকে না। এই সময় ফ্রিজকে অতিরিক্ত ঠান্ডা করার প্রয়োজন পড়ে না, তাই পাওয়ার সেটিং কমিয়ে রাখলেই যথেষ্ট। কিন্তু অনেকেই অভ্যাসবশত বা না জানার কারণে গ্রীষ্মকাল ও শীতকালে একই পাওয়ার সেটিং রেখে দেন, যা মোটেও ঠিক নয়।

শীতকালে সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার সেটিং ১ থেকে ৩ রাখা উচিত। বাইরের পরিবেশ স্বাভাবিকভাবেই ঠান্ডা থাকায় ফ্রিজকে খুব বেশি ঠান্ডা করার প্রয়োজন হয় না। কম পাওয়ার সেটিং রাখলে ফ্রিজের কম্প্রেসার কম কাজ করে, ফলে বিদ্যুৎ খরচও কম হয়। যদি ফ্রিজে সংরক্ষিত খাদ্যের পরিমাণ খুব বেশি না থাকে এবং ফ্রিজটি আধা খালি থাকে, তাহলে ১ বা ২ নম্বরে সেটিং করলেই চলে। কিন্তু যদি মাছ-মাংস, দুধ বা দইয়ের মতো নাজুক খাবার রাখা হয়, তবে সেটিং ৩ এ রাখা উত্তম। এতে খাবারের গুণগত মান অক্ষুণ্ণ থাকবে।

শীতকালে ফ্রিজের দরজা বেশি খোলা না হলে এবং ফ্রিজে নতুন গরম খাবার না রাখা হলে সেটিং পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। তবে মাঝে মাঝে ফ্রিজের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা ভালো, যেন খাবার বেশি ঠান্ডা না হয় বা জমে না যায়। কেউ কেউ মনে করেন শীতকালে কম পাওয়ার রাখলে ফ্রিজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে- এই ধারণা ভুল। বরং বেশি পাওয়ার রাখলে অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিদ্যুৎ খরচ হয় এবং কিছু ক্ষেত্রে ফ্রিজের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। তাই আবহাওয়ার সঙ্গে মিল রেখে পাওয়ার সেটিং সামঞ্জস্য করা বুদ্ধিমানের কাজ।

সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার বেশি রাখলে কি বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়?

সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার যদি সব সময় বেশি রাখা হয়, তাহলে সেটি স্বাভাবিকভাবেই বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে। ফ্রিজের কম্প্রেসার তখন দীর্ঘ সময় ধরে চলে, কারণ তার লক্ষ্য হয় অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রাকে অনেক কমিয়ে আনা। এতে করে কম্প্রেসারের ওপর চাপ বাড়ে এবং দীর্ঘমেয়াদে সেটি ক্ষতিগ্রস্তও হতে পারে। তাহলে এখন আমাদের করনীয় কি? চলুন তবে জেনে আসা যাক।

  • যদি কোনো ব্যবহারকারী সব সময় পাওয়ার ৫ বা ৬-এ রাখেন, তাহলে ফ্রিজ তার সর্বোচ্চ ক্ষমতায় চলবে এবং বিদ্যুৎ খরচ ১৫-২০% পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যদি বাইরের তাপমাত্রা বেশি না থাকে, তাহলে এই সেটিং অপ্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়ায়।
  • অনেকেই মনে করেন বেশি পাওয়ার মানেই ভালো ঠান্ডা। বাস্তবে এটি সব সময় ঠিক নয়। বরং খাবার জমে যেতে পারে বা অতিরিক্ত ঠান্ডা হয়ে যায়, যা অনেক সময় অপচয় ডেকে আনে। আর বিদ্যুৎ বিল তো বাড়েই।
  • ফ্রিজের অতিরিক্ত পাওয়ার সেটিং রাখলে কম্প্রেসার আরও দ্রুত গরম হয়, ফলে ফ্রিজের কার্যক্ষমতা কমে যায়। দীর্ঘমেয়াদে ফ্রিজের মেরামতের প্রয়োজন পড়ে এবং এই খরচও বাড়ে। তাই সঠিক পরিস্থিতি বুঝে পাওয়ার সেটিং ঠিক করাই মঙ্গলজনক।
  • বিদ্যুৎ বাঁচাতে চাইলে পরিবেশের তাপমাত্রা এবং ফ্রিজের ব্যবহার অনুযায়ী পাওয়ার সমন্বয় করতে হবে। যেমন গ্রীষ্মকালে বেশি, শীতকালে কম পাওয়ার রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। প্রতিটি পরিবার তাঁদের ব্যবহারের ধরন বুঝে সেটিং ঠিক করলে বিদ্যুৎ বিল নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কম রাখলে কি খাবার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে?

আমরা উপরে বিস্তারিতভাবে জেনে এসেছি, সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত? চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক, সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কম রাখলে কি খাবার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কি-না সে সম্পর্কে।

সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কম রাখলে খাবার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ, সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার যদি খুব কম রাখা হয় এবং সেটিং সঠিক না হয়, তাহলে খাবার নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফ্রিজের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা যদি নির্ধারিত সীমার উপরে চলে যায়, তাহলে তা ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে, ফলে খাবার দ্রুত পচে যায়। তাহলে এতে আমাদের করনীয় কি? চলুন করনীয়গুলো সম্পর্কে জেনে আসি।

  • গ্রীষ্মকালের সময় যদি ১ বা ২ নম্বর পাওয়ারে ফ্রিজ চালানো হয়, তাহলে সেটি পর্যাপ্ত ঠান্ডা করতে পারে না। ফলে ফল, দুধ, মাছ বা মাংস দ্রুত নষ্ট হয়। এতে শুধু অপচয়ই হয় না, বরং পরিবারের স্বাস্থ্যের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
  • পাওয়ার কম থাকলে ফ্রিজের ভিতরের তাপমাত্রা ৫-৮ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। খাবার সংরক্ষণের জন্য যেখানে ২-৪ ডিগ্রি উপযুক্ত, সেখানে বেশি তাপমাত্রা খাবার নষ্ট করে দিতে পারে। বিশেষ করে রান্না করা খাবার দ্রুত ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসে।
  • পাওয়ার কম থাকলে কিছু খাবার যেমন দই, দুধ, ডিম ইত্যাদি দ্রুত তাঁদের স্বাভাবিক গুণাগুণ হারিয়ে ফেলে। এতে গন্ধ, রং ও স্বাদ পরিবর্তন হয় এবং সেই খাবার আর খাওয়ার উপযোগী থাকে না।
  • যারা দিনের বেশিরভাগ সময় ফ্রিজ খোলা রাখেন বা ঘন ঘন দরজা খুলে ফেলেন, তাঁদের ক্ষেত্রে পাওয়ার কম থাকলে খাবার দ্রুত নষ্ট হয়। তাই বুঝেশুনে, খাবারের পরিমাণ ও ধরন অনুযায়ী পাওয়ার সেটিং করা জরুরি। এটি শুধুমাত্র বিদ্যুৎ সাশ্রয় নয়, স্বাস্থ্য সচেতনতার অংশও বটে।

সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার সেটিংসে কোনো সমস্যা হলে কী করব?

সিঙ্গার ফ্রিজ ঘরের নিত্যপ্রয়োজনীয় একটি যন্ত্র। এটি যেমন খাবার সংরক্ষণ করে, তেমনই বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে অনেক সময় দেখা যায়, ফ্রিজের পাওয়ার সেটিংস ঠিকমতো কাজ করছে না বা সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে পারছে না। এর পেছনে থাকতে পারে কিছু সাধারণ কারণ, যেমন বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা, থার্মোস্ট্যাট খারাপ হয়ে যাওয়া বা ফ্রিজের দরজা ঠিকভাবে বন্ধ না হওয়া।

সিঙ্গার-ফ্রিজের-পাওয়ার-সেটিংসে-কোনো-সমস্যা-হলে-কী-করব

প্রথমেই দেখতে হবে ফ্রিজের পাওয়ার কর্ড ঠিকঠাকভাবে সংযুক্ত আছে কিনা এবং প্লাগ সকেট ঠিকমতো কাজ করছে কিনা। অনেক সময় পাওয়ার সাপ্লাইয়ে সমস্যা থাকলে ফ্রিজ ঠিকমতো ঠান্ডা করতে পারে না। এরপর, ফ্রিজের থার্মোস্ট্যাট যদি কাজ না করে তবে সেটিংসে সমস্যা হতে পারে। এই ক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানের সাহায্য নেওয়া উচিত। তারপর ফ্রিজের দরজা যদি ঠিকভাবে না বন্ধ হয়, তাহলে বাইরের গরম বাতাস ভেতরে প্রবেশ করে এবং ফ্রিজ অতিরিক্ত কাজ করে ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করে, যার ফলে পাওয়ার সেটিংসে চাপ পড়ে। পরিশেষে, যদি দীর্ঘদিন ধরে ফ্রিজের পাওয়ার সেটিংসে সমস্যা চলতে থাকে, তাহলে এটি কোম্পানির কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তারা প্রফেশনালি ফ্রিজের ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেম পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সমাধান দিতে পারবে।

ফ্রিজের ভিতরে তাপমাত্রা মাপার উপায় কি?

আমরা তো জেনেছি, সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত? তবে আমরা কি জানি, ফ্রিজের ভিতরে তাপমাত্রা মাপার সঠিক উপায় কি? যদি না জেনে থাকেন তবে জেনে নিন।

অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না ফ্রিজ যথাযথভাবে ঠান্ডা হচ্ছে কিনা। এক্ষেত্রে তাপমাত্রা মাপা খুবই জরুরি। ফ্রিজের ভিতরের তাপমাত্রা জানা থাকলে আমরা খাবার নিরাপদভাবে সংরক্ষণ করতে পারি এবং ফ্রিজের পাওয়ার সেটিংস কেমন হওয়া উচিত সেটিও বুঝতে পারি।

ফ্রিজের ভিতরের তাপমাত্রা মাপার জন্য নিচের কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে:

  • ডিজিটাল থার্মোমিটার ব্যবহার করুন: বাজারে অনেক ধরনের ডিজিটাল থার্মোমিটার পাওয়া যায় যা ফ্রিজে ব্যবহার উপযোগী। এটি সহজে ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রা পরিমাপ করতে পারে।
  • কাঁচের থার্মোমিটার: এটি সাধারণত দুধ বা খাবারে ব্যবহৃত হয়, তবে ফ্রিজে রাখলে তাপমাত্রা নির্দেশ করে। এটি নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য, তবে ডিজিটালটির তুলনায় একটু সময় বেশি নেয়।
  • ফ্রিজের ইনবিল্ট সেন্সর: কিছু আধুনিক মডেলের সিঙ্গার ফ্রিজে তাপমাত্রা সেন্সর দেওয়া থাকে। এই সেন্সরের মাধ্যমে ডিসপ্লেতে তাপমাত্রা দেখা যায়।
  • জলের গ্লাস পরীক্ষা: একটি গ্লাসে পানি রেখে ফ্রিজে রাখুন এবং ৮ ঘণ্টা পরে দেখুন বরফ জমেছে কিনা। যদি জমে তবে ফ্রিজ পর্যাপ্ত ঠান্ডা করছে।
এই পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন আপনার ফ্রিজ যথাযথভাবে ঠান্ডা করছে কিনা এবং পাওয়ার সেটিংস ঠিক আছে কিনা।

সিঙ্গার ফ্রিজের সঠিক পাওয়ার সেটিংস খুঁজে বের করার টিপস

আমরা জেনেছি, সিঙ্গার ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখা উচিত? এবং আমরা একই সাথে আরো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপুর্ণ পয়েন্ট সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনেছি। এবার আমরা আলোচনা করবো এবং জানবো, সিঙ্গার ফ্রিজের সঠিক পাওয়ার সেটিংস খুঁজে বের করার টিপস সম্পর্কে। যদিও বা আমরা এই বিষয়গুলো সম্পর্কে উপরে জেনে এসেছি তবুও হালকা-পাতলাভাবে আমরা আজকের আর্টিকেলের শেষ অংশে এটি রিভিশন আকারে রেখেছি যেন বুঝতে আপনার সুবিধা হয়।

ফ্রিজের সঠিক পাওয়ার সেটিংস নির্ভর করে আবহাওয়া, খাবারের পরিমাণ এবং ব্যবহারের সময়ের ওপর। অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না কোন পাওয়ার লেভেলটি আমাদের জন্য উপযুক্ত। ভুল সেটিংসের ফলে খাবার নষ্ট হতে পারে বা অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ হতে পারে। এই অংশে আমরা কিছু কার্যকর টিপস আলোচনা করবো যার মাধ্যমে আপনি সহজেই আপনার সিঙ্গার ফ্রিজের উপযুক্ত পাওয়ার সেটিংস নির্ধারণ করতে পারবেন।

আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে পাওয়ার সেটিংস ঠিক করা:

গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে, তাই এই সময় ফ্রিজকে বেশি ঠান্ডা করতে হয়। এক্ষেত্রে পাওয়ার সেটিংস ৪ বা ৫ রাখা উত্তম। শীতকালে বাইরের তাপমাত্রা কম থাকে, তাই তখন সেটিংস ২ বা ৩ রাখলেই যথেষ্ট হয়। আপনার অবস্থানের আবহাওয়া যদি বেশি আর্দ্র হয়, তাহলে ফ্রিজ একটু বেশি ঠান্ডা করতে পারে না। তখন পাওয়ার বাড়িয়ে দিতে হয়। তাই সবসময় মৌসুম অনুযায়ী সেটিংস পরিবর্তন করতে হবে।

ফ্রিজে সংরক্ষিত খাবারের পরিমাণ দেখে পাওয়ার ঠিক করা:

ফ্রিজ যদি খালি থাকে, তাহলে কম পাওয়ার সেটিংস যথেষ্ট। তবে ফ্রিজ বেশি ভর্তি থাকলে সেটিকে ঠান্ডা রাখতে বেশি পাওয়ার দরকার হয়। যদি আপনি সপ্তাহের বাজার একসাথে করে ফ্রিজে রাখেন, তাহলে সেটিংস ৫ বা তার কাছাকাছি রাখা ভালো। অতিরিক্ত খাবার রাখলে ফ্রিজে বাতাস চলাচলে বাধা আসে এবং ঠান্ডা কমে যায়। তাই তখন বেশি পাওয়ার দরকার পড়ে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে পাওয়ার সেটিংস ঠিক করুন।

দরজা খোলার পরিমাণ অনুযায়ী পাওয়ার নিয়ন্ত্রণ:

যদি আপনি বা আপনার পরিবারের সদস্যরা ঘন ঘন ফ্রিজের দরজা খুলে থাকেন, তাহলে ঠান্ডা বাতাস বেরিয়ে যায় এবং ফ্রিজকে বারবার ঠান্ডা হতে হয়। তখন ফ্রিজকে বেশি কাজ করতে হয়। এই ক্ষেত্রে পাওয়ার সেটিংস একটু বাড়িয়ে রাখা উচিত। সাধারণত ৪ বা ৫ নম্বরে রাখা ভালো হয়। তবে দরজা কম খোলা হলে ৩ বা ২ তেও কাজ চলে যায়। এই বিষয়টি অনেকেই এড়িয়ে যান, যা ফ্রিজের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের দিক মাথায় রেখে সেটিংস নির্ধারণ:

সঠিক পাওয়ার সেটিংস শুধু ফ্রিজকে কার্যকর রাখে না, বরং বিদ্যুৎ বিল কমাতেও সাহায্য করে। যদি ফ্রিজ অতিরিক্ত ঠান্ডা করে, তবে বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়। তাই এমন পাওয়ার সেটিংস বেছে নিন যা খাবার নিরাপদ রাখবে এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয় করবে। সাধারণত মাঝারি লেভেলের সেটিংস (৩-৪) অধিকাংশ সময়ের জন্য উপযুক্ত। তাছাড়া ফ্রিজের মডেল অনুযায়ী কোম্পানির ম্যানুয়াল পড়া যেতে পারে।

শেষ মন্তব্য

আমরা আজকের আর্টিকেলের শেষ অংশে পৌছে গেছে এবং শেষ মন্তব্য হিসেবে আমরা বলতে পারি যে, সিঙ্গার ফ্রিজের সঠিক পাওয়ার সেটিংস নির্ধারণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কারণ এটি শুধু খাবারের গুণগত মান রক্ষা করে না, বরং বিদ্যুৎ সাশ্রয়েও বড় ভূমিকা রাখে। যদি ফ্রিজের সেটিংস সঠিক না হয়, তাহলে খাবার নষ্ট হওয়া বা অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ হওয়া খুবই সাধারণ সমস্যা। তাই শুরু থেকেই সচেতন হতে হবে। একজন ব্যবহারকারী হিসেবে আমাদের উচিত হবে নিয়মিত ফ্রিজের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা, দরজা ঠিকমতো বন্ধ হচ্ছে কিনা দেখা এবং মাঝেমাঝে সেটিংস পরিবর্তন করে দেখা। ফ্রিজের রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো করলে এর কার্যক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হয়।

সিঙ্গার ফ্রিজ সাধারণত অনেক দিন চলে এবং এর সার্ভিসও ভালো। তবে সেটিংস সঠিকভাবে না বুঝে ব্যবহার করলে এর কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। তাই ফ্রিজ কেনার পর থেকেই ম্যানুয়াল পড়ে বুঝে নেওয়া উচিত কোন সময়ে কেমন সেটিংস রাখা উচিত। শেষমেষ বলা যায়, ফ্রিজ একটি যন্ত্র হলেও এটি আপনার দৈনন্দিন জীবনের অংশ। একে যত্ন করে ব্যবহার করলে খাবার যেমন ভালো থাকবে, তেমনই আপনার বিদ্যুৎ বিলও কমবে। আর সবসময় মনে রাখবেন, কোনো সমস্যা হলে অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

BLOGGER BD-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url